রংপুরের গংগাচড়া ও পীরগাছায় তিস্তার চরাঞ্চলে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা আগাম আলু চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। চরাঞ্চলের মাঠজুড়ে সময়ের আগে আলু রোপণকে ঘিরে এখন প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
সরেজমিনে তিস্তার চরাঞ্চলের চর ছাওলা, গাবুড়ার চর, চর তাম্বুলপুর, রহমতের চর, শিবদেব চর ও চর জুয়ান গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, চরাঞ্চলে হিরা-২, ব্রি-৩৩, ব্রি-৩৯, ব্রি-৫৬ ও বীনা-৭ জাতের ধানসহ স্বল্পমেয়াদী আগাম জাতের আমন ধান লাগানো হয়েছিল। বর্তমানে ধান কাটা ও মাড়াই প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এখন চলছে আগাম আলু লাগানোর কাজ। এ জন্য জমি তৈরিসহ সার প্রয়োগ ও আলু রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। বেশীর ভাগ জমিতে নারী শ্রমিকরা আলু রোপণের কাজ করছেন।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছরে দু’দফার বন্যায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তিস্তার নিকটবর্তী এলাকার কৃষকরা। সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তারা কোনো সহায়তায় পায়নি। ফলে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে তারা আগাম আলু চাষের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। তবে এ বছর তুলনামূলক আলু বীজের দাম কম, সারের সরবরাহ স্বাভাবিক ও স্বল্প মজুরিতে নারী কৃষি শ্রমিক মেলায় কৃষকরা আগাম জাতের আলু আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন।
গাবুড়ার চরের কৃষক বাতেন মিয়া বলেন, ’হামরা হইচি চরের মানুষ। এইখানকার মাটিত সউগ আবাদও হয় না। আলু, বাদাম, মরিচ, পেঁয়াজ এই ফসলগুলা ভালো হয়। এখন চরোত আলু নাগাচ্চি। বুদ্ধি-সুদ্ধি করি ফসল নাগবার নাগে। এই আলু আগোতে উঠপে, বাজারোত তখন দামও ভালো পামো।’
চর গ্রামেরর কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, চরাঞ্চলের মাটি আলু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। চরের বালুতে বৃষ্টিপাত হলেও আলুর তেমন ক্ষতি হয় না। তাই আগাম আলু চাষে ভয়ের কোনো কারণ নেই।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৮ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০ হেক্টরে আগাম জাতের আলু চাষ হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান বলেন, চরাঞ্চলের বালু মিশ্রিত পলি মাটিতে আগাম আলুর ফলন ভালো হয়। তাই কৃষকেরা আগাম আলু চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। আগাম আলু ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে তুলে বাজারজাত করা যায় বলে এ আলু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেশি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল