উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পেয়েছে বগুড়া সদর উপজেলার শিববাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই স্কুলটিই এখন বগুড়ার আনন্দ স্কুল নামে পরিচিত। শতভাগ শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন উপস্থিত হন। ফলাফলও ভাল করে তারা। বিদ্যালয়টি ১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের শিক্ষামুখি করে তুলতে কর্তৃপক্ষ খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের কাছে শেখাটাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে তিন তলা ভবনটি সবসময় রং-তুলির আঁচড়ে রাঙিয়ে রাখা হয়। ১৪ শতক জমির উপর প্রতিষ্ঠিত স্কুলটিতে এখন প্রায় তিনশত শিক্ষার্থী রয়েছে। চলতি বছর নতুন করে আরও শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের বিনোদনের মাধ্যমে স্কুলে শিক্ষা প্রদান করা হয়। পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আগ্রহী করা তোলা হয়। শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য চিত্ত-বিনোদনের জন্য দোলনা, স্লিপারসহ নানা ধরনের খেলার সামগ্রীর ব্যবস্থা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য ল্যাপটপ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য রয়েছে সিসি ক্যামেরা। বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ করা হয়ে থাকে। শিশুরা যাতে খুব সহজেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বেড়ে উঠতে পারে সে উদ্দেশ্যে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি রয়েছে বিদ্যালয়ের দেয়ালে। এছাড়াও পুরো স্কুলের দেয়ালে দেয়ালে মজার সব প্রাণীর ছবি ও আদর্শবাণী রয়েছে। শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা উদ্বুব্ধ করার জন্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন ভাল কাজ শেখানো হয়। পরিপাটি পরিবেশ সুশৃঙ্খল শিশুদের জন্য আকর্ষণীয় শিখন পদ্ধতি ও শিক্ষা উপকরণের নজর কেড়েছে শিক্ষার্থীদের। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কক্ষগুলো সবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। শিক্ষার্থীদেরকেও পরিচ্ছন্ন থাকার বিষয়েও শেখানো হয়। শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার শেষ করে ঠিক সময়ে ক্লাসে যাচ্ছে, আবার টিফিনের ঘণ্টাতে মেতে উঠছে খেলায়।
স্কুলের অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের সন্তানরা এই স্কুলে আনন্দ নিয়েই আসে। কারণ পড়ার পাশাপাশি স্কুলে আসলে তারা খেলারও সুযোগ পায়।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লায়ন কবিরাজ তরুন কুমার চক্রবর্তী জানান, শিক্ষার্থীদের আনন্দমুখর পরিবেশে পাঠদান করায় অনেক শিক্ষার্থী স্কুল খোলার আগেই আসছে। তারা আনন্দ পাচ্ছে বলে প্রতিদিন স্কুলে আসছে। তিনি বলেন, ওয়ার্ডে কোন শিক্ষার্থী যেন অর্থাভাবে শিক্ষা হতে ঝরে না পড়ে এ জন্য সহযোগিতা থাকবে। বিভাগীয় পর্যায়ে তাকে টানা তিনবার এসএমসিতে (স্কুল ম্যানেজিং কমিটি) শ্রেষ্ঠ পুরস্কারে ভূষিত করায় কর্মস্পৃহা বেড়ে গেছে। স্কুলটিকে আরও সাজানো হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তাছলিমা খন্দকার জানান, মেধাবী ছাড়া দুর্বল ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাতে সমান শিক্ষা লাভ করতে পারে সে জন্য কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। ফলে দেখা যায় প্রতি বছরেই পিএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাশ করছে। স্কুলের পরিবেশ সুন্দর থাকার জন্য অভিভাবকরাও খুশি হয়ে তাদের সন্তানদেরকে স্কুলে পাঠায়। পাঠ্যপুস্তকের বাহিরে এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রতিদিন খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, মুক্তিযুদ্ধের গল্পও পড়ানো হয়।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা