নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে একটি হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন আদালত। একই সঙ্গে অন্য আরেকটি হত্যাচেষ্টা মামলায় আইভীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের করা রিকশাচালক মো. তুহিন হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈনউদ্দিন কাদির এ আদেশ দেন।
তার আগে, ফতুল্লা থানার মো. সাইদ ওরফে চাঁদ মিয়া হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন আবেদন করলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু শামীম আজাদ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২০ জুলাই বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রিকশা চালক মো. তুহিন। পরে ১৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী আলেয়া আক্তার মিম।
ওই হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৯৯ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। আইভী এ মামলার ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন বলেন, উচ্চ আদালতে মামলাটা বিচারাধীন আছে। আমরা আদালতে এটা উপস্থাপন করেছি। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি গ্রহণ করে উচ্চ আদালতের বিচারাধীন মামলায় দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এটা আমার ওকালতি জীবনে প্রথম দেখলাম।
তিনি বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হত্যা মামলায় এজাহারে আইভীর সম্পৃক্ততার কোনো উল্লেখ নেই। আইভীর বিরুদ্ধে কোনো ধারায় অভিযোগের বর্ণনা নেই। রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নামঞ্জুর আবেদন করেছিলাম। আদালত শুনানি শেষে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। একই সঙ্গে আরেকটি হত্যাচেষ্টা মামলায় আইভীর জামিন আবেদন করেছিলাম। আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, একটি হত্যা ও আরেকটি হত্যার চেষ্টা মামলায় আইভী এহাজানামীয় হুকুমের আসামি হিসেবে রয়েছেন। আদালত হত্যা মামলায় দুই দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আরেকটি হত্যাচেষ্টা মামলা জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।
এর আগে, গত ৯ মে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার চুনকা কুটিরের নিজ বাসা থেকে সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরে মিনারুল হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আইভীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মোট ছয়টি মামলা আছে। একে একে ছয়টি মামলাতেই তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গ্রেফতারের পর থেকে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে আছেন।
বিডি প্রতিদিন/কেএ