বাংলাদেশে মোবাইল সিম ব্যবহারের সীমা কমিয়ে একজন গ্রাহকের জন্য সর্বোচ্চ ১০টি নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। আগামী ১৫ আগস্ট থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। বর্তমানে যেসব গ্রাহকের নামে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধিত রয়েছে, সেগুলোর অতিরিক্ত অংশ ধাপে ধাপে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হবে।
বিটিআরসির নিয়মিত কমিশন বৈঠকে ৩০ জুন এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, নতুন সীমা বাস্তবায়নে প্রায় ২৬ লাখ গ্রাহকের নামে থাকা ৬৭ লাখ সিম নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। গ্রাহকদের মধ্যে যাদের সিমের সংখ্যা বেশি, তাদের একটি তালিকা মোবাইল অপারেটরদের কাছে পাঠানো হবে। অপারেটররা গ্রাহকদের জানিয়ে কোন ১০টি সিম তারা রাখতে চান, তা নির্ধারণ করতে বলবে। ব্যবহার পরিমাণ ও আর্থিক লেনদেনের গুরুত্ব অনুযায়ী অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হবে।
২০১৭ সালে বিটিআরসি প্রথমবারের মতো একজন গ্রাহকের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ সিমের সীমা নির্ধারণ করেছিল। এরপর ২০২২ সালে নিবন্ধন পদ্ধতি হালনাগাদ হলেও সিমসংখ্যা অপরিবর্তিত ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সিম জালিয়াতি, ভুয়া নিবন্ধন ও অপরাধমূলক কাজে ব্যবহারের অভিযোগ বেড়ে যাওয়ায় সীমা কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বিটিআরসির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে মোট সক্রিয় মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ৬২ লাখ। আর প্রকৃত গ্রাহকের সংখ্যা ৬ কোটি ৭৫ লাখের মতো। এসব গ্রাহকের মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি পাঁচটি বা তার কম সিম ব্যবহার করছেন। ৬ থেকে ১০টি সিম রয়েছে ১৬ দশমিক ২৩ শতাংশের নামে, আর ১১ থেকে ১৫টি সিম রয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ গ্রাহকের নামে। ফলে নতুন সীমার ফলে বড় অংশের ওপর প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে কমিশন।
এদিকে ২৪ জুন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সিম ব্যবস্থাপনায় আরও কড়াকড়ি আনার সুপারিশ করা হয়। সভায় সিম নবায়ন বছরে একবার করার বিষয়েও আলোচনা হয়। এতে উঠে আসে, অতিরিক্ত সিম অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, বিশেষ করে প্রতারণা, তদবির, চাঁদাবাজি ও সরকারি কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে ফোন কল দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ।
বিটিআরসি জানিয়েছে, নতুন সীমা কার্যকর করতে মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে আগাম প্রচারণা ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হবে। সিম নিষ্ক্রিয় করার সময় গ্রাহকদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল