বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২০১৭ সালে রংপুর বিভাগের আট জেলায় দুই লাখের বেশি তাল গাছের চারা ও বীজ লাগানো হয়। বর্তমানে এসব গাছের অধিকাংশেরই হদিস নেই। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ৯৫ শতাংশ গাছই নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে কত তাল গাছ জীবিত রয়েছে-এর কোনো তথ্য নেই কৃষি অফিসে। বন বিভাগ বলছে, কৃষি অফিসের লাগানো তাল গাছের অধিকাংশই নেই।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে রংপুর বিভাগের ৫৮টি উপজেলায় এক লাখ ১৬ হাজার তালের চারা ও বীজ লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রতিটি উপজেলায় দুই হাজার করে বীজ ও চারা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনেক স্থানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি লাগানো হয়। ঠাকুরগাঁওয়ে ১০ হাজার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও লাগানো হয়েছিল ১৫ হাজার চারা ও বীজ। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার, কিন্তু লাগানো হয় ২০ হাজার। রংপুরের সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় তালবীজ রোপণ করা হয়েছিল। এভাবেই এই বিভাগের প্রতিটি উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি তাল গাছ লাগানো হয়েছিল বলে সে সময় দাবি করে কৃষি বিভাগ। সেই হিসেবে দুই থেকে আড়াই লাখের বেশি চারা ও বীজ লাগানো হয়েছিল। সরজমিনে রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুরসহ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, লাগানো সেসব তাল গাছের অস্তিত্ব নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের অন্যান্য উপজেলায়ও একই অবস্থা। কোথাও ১০ শতাংশ গাছ টিকেনি। সূত্রমতে দুই লাখের বেশি তাল গাছের চারা ও বীজ নষ্ট হয়েছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (সদ্য অবসরপ্রাপ্ত) শফিকুল ইসলাম ও উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, কত সংখ্যক তাল গাছ রয়েছে, এ তথ্য তাদের কাছে নেই। রংপুর বন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের রোপণ করা চারা ও বীজের অস্তিত্ব পাচ্ছি না। কোথাও কোথাও দুয়েকটি ভাগ্যক্রমে বেঁচে রয়েছে।