চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার কালাপানিয়া ইউনিয়নের মো. মানিকের ১২ বছর বয়সী সন্তান আবদুর রহমান। গত এক সপ্তাহ ধরে শিশুটি ভুগছিল শারীরিক নানা জটিলতায়।
গত সোমবার স্থানীয় চিকিৎসক তাকে নগরের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরামর্শ মতে রওনা দেশ শহরের দিকে। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ায় উত্তাল সাগর। তাই মিলছিলো না নৌযান। সোমবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ওই কিশোরকে নৌযানের আশায় ঘাটেই অপেক্ষা করে পরিবার। অনেক বিলম্বে একটি নৌকা মিলেছিলো। কিন্তু সেই নৌকাতেই কিশোরটি চলে যায় না ফেরার দেশে। মঙ্গলবার সকালে কিশোরের মরদেহ নিয়ে এলাকায় ফিরে পরিবার।
পারিবারিক সূত্র জানায়, আবদুর রহমান অসুস্থ হওয়ার পর প্রথমে সন্দ্বীপের বেসরকারি একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত সোমবার সকালে তাকে সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসক আবদুর রহমানকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। এরপর সোমবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বোটের জন্য ঘাটেই অপেক্ষায় ছিলেন। এ সময় আবদুর রহমানের অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। রাত ১০টার দিকে একটি লাল বোটের (উপকূলে যাত্রী নামানোর ছোট নৌকা) ব্যবস্থা করা হয়। ঝুঁকি নিয়ে সেটিতেই সীতাকুণ্ডের উদ্দেশে রওনা দেন তারা। পরে সেই রাতের অন্ধকারে সেই নৌকাতেই মারা যায় ছেলেটি।
স্থানীয়রা বলেন, জরুরি মুহূর্তে রোগী পারাপারের জন্য পাওয়া যায় না নৌযান। এমন দুঃখজনক চিত্র এটি নতুন নয়। প্রায়ই এমন ভোগান্তি আর করুণ পরিণতির মুখে পড়ে মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, লোকবল ও সরঞ্জামের ব্যবস্থা করে এমন দুর্ভোগ ঠেকানোর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মানস বিশ্বাস বলেন, ১২ বছরের ওই কিশোরের মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এমন ক্ষেত্রে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হলে একজন উপজেলা সার্জনের প্রয়োজন রয়েছে, কিন্তু এই ধরনের পোস্ট আমাদের নেই। তবে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই তাঁকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছি।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল