২৯ নভেম্বর, ২০২২ ১৯:৪৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমনের বাম্পার ফলন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমনের বাম্পার ফলন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ

হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রোপা আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলার ৯টি উপজেলাতে রোপা আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। বর্তমানে জেলার কসবা, আখাউড়া ও বিজয়নগর উপজেলায় পুরোপুরি ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাকি ৬ উপজেলায় আংশিক ধান কাটলেও পুরোপুরি শুরু হতে আরো এক সপ্তাহ লাগবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫১ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমি (হাইব্রিড-৪১০ হেক্টর, উফশী ৪৫ হাজার ৯১০ হেক্টর ও স্থানীয় ৫ হাজার ১৪৫ হেক্টর)। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৫৪ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমি (হাইব্রিড ৪০৮ হেক্টর, উফশী ৪৯ হাজার ০৫২ হেক্টর ও স্থানীয় ৫ হাজার ১৪৫ হেক্টর)। যা গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমি বেশি।

কৃষি কর্মকর্তাদের আশাবাদ চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৪৯ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। যার মধ্যে হাইব্রিড ১ হাজার ৬৩২ মেট্রিক টন, উফশী ১ লাখ ৩৮ হাজার ১৮৯ মেট্রিক টন ও স্থানীয় ৯ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন।

সরেজমিন সদর উপজেলার অষ্টগ্রাম, সুহিলপুর, বেহাইর, মজলিশপুর ও পৌর এলাকার ভাদুঘর এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা জমি থেকে ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বেহাইর এলাকায় জমি থেকে ধান কাটা হচ্ছে হারভেস্টার মেশিন দিয়ে। এদিকে ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরাও খুশি।

পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের কৃষক আইয়ূব আলী বলেন, তিন কানি জমিতে (৩০ শতাংশে এক কানি) রোপা আমনের আবাদ করেছি। জমিতে সেচ দিয়েছি মাত্র একবার। এতেই ভালো ফলন হয়েছে। ধানে চিটাও কম। খড়ের দামও বেশি। তিন কানি জমির খড় বিক্রি করেছি ১৫ হাজার টাকা।

একই এলাকার কৃষক শাহিনুর ভূইয়া বলেন, ৬ কানি জমিতে রোপা আমন ব্রি ধান-৭৫ আবাদ করেছি। রোপা আমন ব্রি ধান-৭৫ সুগন্ধিযুক্ত। ভালো ফলন হয়েছে। সদর উপজেলার তালশহর পূর্ব ইউনিয়নের অষ্টগ্রামের কৃষক আবদুল করিম মিয়া বলেন, এই বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে শ্রমিকের মূল্য বেশি।

নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বেহাইর গ্রামের কৃষক আবদুল মালেক, ফরহাদ মিয়া, সাজিদ সরকার ও প্রদীপ সরকার বলেন, এই বছর রোপা আমনের ভালো ফলন হয়েছে। ধান কাটার শ্রমিকের মূল্য বেশি থাকায় আমরা হারভেস্টার মেশিন দিয়ে জমির ধান কেটেছি। তারা বলেন, এক কানি জমির ধান শ্রমিক দিয়ে কাটালে তাদের দিতে হয় ৩ হাজার টাকা। কিন্তু মেশিন দিয়ে কাটালে দেয়া লাগে ২ হাজার টাকা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, জেলায় রোপা আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ফলনও হয়েছে ভালো। এ বছর ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৪৯ মেট্রিক টন রোপা আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা আগামী মৌসুমে জেলাতে যাতে কোনো অনাবাদি জমি না থাকে, সেজন্য কাজ করছি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর