বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বন্ধ হয় রেল চলাচল। এরপর টানা ২৭ দিনই বন্ধ ছিল দেশের এই নিরাপদ পরিবহন খাত। অবশেষে বৃহস্পতিবার থেকে আবারও পুরোদমে আন্তঃনগর রেল চলাচল শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে ফেরত দেxয়া হচ্ছে বন্ধের আগে অগ্রিম বিক্রিত টিকিটের টাকা। গত ১৯ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত অগ্রিম বিক্রি হওয়া টিকিটের টাকা গতকাল থেকে ফেরত দেওয়া শুরু হয়। আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত থাকবে এ সুযোগ।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটের সাগরিকা এক্সপ্রেস গতকাল সকাল ৮টায় ছেড়ে যায়। চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের কর্ণফুলী এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে, মহানগর গোধুলি বিকাল ৩টায়, কক্সবাজার এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বিকেল ৪টায়, ময়মনসিংহগামী নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ৪ টা ৪৫ মিনিটে, চট্টগ্রাম-নাজিরহাট লোকাল ট্রেন বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে এবং চাঁদপুর রুটের মেঘনা এক্সপ্রেস চাড়ে সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায়। তাছাড়া শিডিউল মতে, সিলেটগামী উদয়ন এক্সপ্রেস রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী পর্যটন এক্সপ্রেস রাত ১১টা ১৫ মিনিটে, ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীতা রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ও ঢাকাগামী মেইল ট্রেন রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে দুপুর ১২টার দিকে হাটহাজারী ও দোহাজারীর উদ্দেশ্য দুটি মালবাহী ট্রেন ছেড়ে যায়।
চট্টগ্রাম রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে প্রথমে পণ্যবাহী রেল, পরে লোকাল, মেইল ও কমিউটার রেল এবং থেকে পুরোদমে আন্তঃনগর রেল চলাচল শুরু হয়। এখন থেকে রেল পুরোদমে চলাচল করবে। তাছাড়া যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যাপরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট আছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তারেক ইমরান বলেন, গতকাল থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন পুনরায় চলাচল শুরু হয়। ফলে গতকাল সকাল ৯টা থেকে স্থগিতকৃত ট্রেনের টিকিট রিফান্ড করা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে ট্রেন চালুর পর থেকে পরবর্তী ১০ দিন পর্যন্ত টিকিট রিফান্ড রিকোয়েস্ট সাবমিট করা যাবে। যে সকল যাত্রী অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় করেছিলেন তারা অনলাইন মাধ্যম এবং যারা স্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট ক্রয় করেছিলেন, তারা স্টেশন কাউন্টারের মাধ্যমে ক্রয়কৃত টিকিট রিফান্ড করতে পারবেন।
জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জুলাই দেশের বিভিন্ন এলাকায় রেলপথ অবরোধ করা হলে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরের দিন ট্রেন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দিন সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন ১৯ জুলাই সরকারের কারফিউ জারি করার পর থেকে সারাদেশে পুরোপুরি বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। এর মধ্যে গত ৩ আগস্ট পর্যন্ত সীমিত পরিসরে কমিউটার ট্রেন চলাচল করেছিল। পরে ৪ আগস্ট রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তখন থেকে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। গত সোমবার থেকে পণ্যবাহী কন্টেনার ও তেলবাহী ট্রেন এবং গত মঙ্গলবার থেকে মেইল, লোকাল, ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়। গতকাল শুরু হয় আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল