ঝিনাইদহে ভুল চিকিৎসায় রিফাত (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকা ল্যাব নামের ক্লিনিকটির অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করা হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে অভিযান পরিচালনা করেন সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথের নেতৃত্বে একটি টিম।
মৃত রিফাত, দরিবিন্নি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হরিণাকুন্ডু উপজেলার সড়াবাড়িয়া গ্রামের বাদশা মুন্সির ছেলে।
জানা গেছে, অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যাথা নিয়ে শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে স্কুলছাত্র রিফাত ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার ঢাকা ল্যাব নামে একটি ক্লিনিকে ভর্তি হন। এরপর তার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। অপারেশন করেন ডা. রেজা সেকেন্দার। অপারেশনের কিছুক্ষণ পর রোগীর খিঁচুনি শুরু হয় এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে স্বজনদের সান্তনা দিতে মৃত রোগীকে ডা. রেজা সেকেন্দার প্রথমে কুষ্টিয়া ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, তিন ঘণ্টা আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
রিফাতের পিতা বাদশা মুন্সি জানান, তার ছেলে অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। তিনি এর বিচার চান।
এলাকার ইউপি মেম্বর আল আমিন জানান, রিফাত এবার এসএসসি পরীক্ষা দিত। কিন্তু ভুল চিকিৎসার কারণে ছেলেই মারা গেল।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে ডা. রেজা সেকেন্দারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভি করেননি। আর ঘটনাটির পর থেকে ক্লিনিকের মালিক আশরাফুজ্জামান লিপন ও ম্যানেজার আসিফ মিয়া পলাতক।
ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, স্কুলছাত্র রিফাতের মৃত্যু পর সোমবার (৭ অক্টোবর) ওই ক্লিনিকটির অপারেশন থিয়েটার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রিপোর্ট দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন,ডা. রেজা সেকেন্দার আর অপারেশন করবেন না বলে একাধিকবার মুচলেকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তিনি একের পর এক অপারেশন করে যাচ্ছেন। এর আগে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কাছেও ডা. রেজা সেকেন্দার আর অপারেশন করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছিলেন। বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সমঝোতার ভিত্তিতে ঘটনা মীমাংসা করে ফেলেন। তাই শক্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় না।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম