ছোট পর্দার ড্যাশিং হিরো আরশ খান। স্বল্প ক্যারিয়ারে অসংখ্য ভালো গল্পের চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করেছেন এ অভিনেতা। তার অভিনীত নাটকগুলোর প্রতি দর্শকের যেমন আগ্রহ তৈরি হচ্ছে ঠিক তেমনি নাট্যনির্মাতারাও আরশ খানকে নিয়ে নাটক নির্মাণের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তাঁর সঙ্গে সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে শোবিজ প্রতিবেদকের কথোপকথন
আজ শুটিং আছে?
না নেই। নিজেকে সময় দিচ্ছি। নিজেকে নিয়ে ভাবছি।
রাজপথে দেখা গেছে আন্দোলনকারীদের সারিতে...
আমি তো একজন থিয়েটারকর্মী। আমার অভিনয়জীবন শুরু মঞ্চে। লোকনাট্য দলের ‘মুজিব মানে মুক্তি’ নাটকে আমি বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছি। ৩০০তম শো পর্যন্ত আমি ছিলাম গ্রুপের সঙ্গে। আমি তখন শিশুশিল্পী। প্রথম ১০০তম শো পর্যন্ত বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসেনি। সে সময় এ নাটকে অভিনয় করতে কতটুকু ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়েছে তা আমি জানি, আমার পরিবার জানে, লোকনাট্য দলের সদস্যরা জানে। এ নাটক করে আমি বা আমার পরিবার দুই টাকা কোনোদিন ঘরে আনিনি। নাটকে অভিনয় করতে করতে কখন বঙ্গবন্ধুকে ভিতরে ধারণ করে ফেলেছি তা বলতে পারব না। কিন্তু তার আদর্শে বেড়ে ওঠা আমি আজ অনেক কিছুই নিতে পারি নাই। আমার স্কুল, আমার কলেজ, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়াররা তাদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামে। তাদের ওপর যে আক্রমণ তা কোনোভাবেই একজন মানুষ হিসেবে, একজন শিল্পী হিসেবে, একজন ছাত্র হিসেবে আমি মেনে নিতে পারিনি। আমি খুব সাধারণ পরিবারের ছেলে। আমার মা একজন শিল্পী, আমার বোনও একজন শিল্পী। সাধারণ আরশকে অসাধারণ বানিয়েছেন এই ছাত্ররা, তাদের মা, তাদের বাবা, তাদের পরিবার, দেশের সাধারণ জনগণ। এমন দিনে আমার পক্ষে আর ঘরে বসে থাকা সম্ভব ছিল না। আমার আন্দোলন কোনো দলের বিরুদ্ধে ছিল না। আমার চাওয়া একটাই ছিল ‘আর কোনো ছাত্র বা ছাত্রী যেন রক্তাক্ত না হয়। আমি জানি এই দেশ আমার, দেশের মানুষ আমার। খেটে খাওয়া মানুষ আমি। শূন্য থেকে উঠে এসেছি আবার হয়তো শূন্যে মেলাব কিন্তু আর কোনো আবু সাইদের মৃত্যুর সাক্ষী হতে চাইনি।
কম কাজ করা হচ্ছে, কেন?
ভালো গল্প ও চরিত্র বুঝে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই আমি এখন কাজ কম করছি। এখন নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।
আরশ-তানিয়া বৃষ্টি জুটি হিসেবে কতখানি নির্ভরযোগ্য?
তানিয়া বৃষ্টির ক্যারিয়ার কিন্তু দীর্ঘদিনের। এত বছরে তানিয়ার প্রথম জুটিটাই কিন্তু আমার সঙ্গে। আমি যদি ভুল না করি, জুটি হিসেবে। আবার আমি কিন্তু নতুন হিসেবে সিনিয়র একজনকে জুটি হিসেবে পেয়েছি। একটা বিষয় হচ্ছে, ওর পারফরমেন্সে কিন্তু সামনের যে কো-অ্যাকটর থাকে তার পারফরমেন্স প্লাস হয়। যেটা কো-আর্টিস্ট হিসেবে আমারও হয়েছে। আমি তো বলব এ জুটিটার মধ্যে একটা ম্যাজিক আছে।
একক হিরো হিসেবে কাজ করার মতো যোগ্যতা রাখে আরশ?
নিশ্চয়ই হবে। সেটা যে কোনো সময়ে। আমি যখন আশানুরূপ গল্প বা স্ক্রিপ্ট, চরিত্র পাব তখন অবশ্যই করব। বড়পর্দা মানে সব বড় ব্যানারে হবে। ফ্রেম বড়, কাজ বড়, টাকার অঙ্কটাও বড় হবে। প্রপার প্রিপারেশন ছাড়া, প্রপার সাঁতার না জেনে তো আমি সাগরে ঝাঁপ দেব না! আমার কাছে অনেক ফিল্মের অফার এসেছে, নির্মাতারাও গুণীজন। কিন্তু যখন গল্প আর বাজেট ঠিকঠাকমতো না পাই তখন কি করে করি?
মিডিয়া সিন্ডিকেটের সম্মুখীন কেমন হয়েছেন?
তেমন করে হয়নি। আমার মনে হয়, আমার সিনিয়ররা যথেষ্ট হেল্প করেছে, এখনো করছে। সর্বদা উৎসাহ দেয়। কখনো ভিতরে ভালোবাসা গুঁজে দেয় আবার কখনো বারুদ। আর মিডিয়া পলিটিক্স? সেটা তো পৃথিবীর প্রত্যেকটা জায়গাতেই দেখা যায়। পলিটিক্সের বাইরে আসলে কিছুই নয়। পলিটিক্স বিউটিফুল। আর পুরো মিডয়াটাই তো সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেট ছাড়া মিডিয়া ইন্ডাষ্ট্রি চলে কি?