২২ আগস্ট, ২০২২ ১৪:১০

‘আজকে সবাই জানে হি ইজ আ জিনিয়াস’

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

‘আজকে সবাই জানে হি ইজ আ জিনিয়াস’

মোশাররফ করিম-মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

আমি বাংলাদেশে যাদের সাথে কাজ করেছি, তাদের মধ্যে চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম, নুসরাত ইমরোজ তিশা, অপি করিম, তাসনিয়া ফারিণ, শাহীর হুদা রুমি -এই কয়জন অভিনয় শিল্পীর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতাগুলা নিয়া মাঝে মধ্যে লিখতে ইচ্ছা করে। পরে আর লিখা হয় না।

আজকে মোশাররফ করিমের জন্মদিন উপলক্ষে মনে হইলো এক কিস্তি লেখা যায়। এভাবে এক এক করে চঞ্চল ভাই, তিশাসহ সবার জন্মদিনে একটা করে লেখা চেষ্টা করতে চাই।

মোশাররফ করিমের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ ‌‘ক্যারম’! ক্যারম কাজটা মূলত দুইটা জিনিসের অনুপ্রেরণায় বানানো। প্রথমটা হলো ছোটবেলায় ক্যারমে আমার নিদারুণ ব্যর্থতা। মাসুদ, বাবলু, এমনকি জাহাঙ্গীরের কাছেও হারতাম। কিন্তু পরাজয়টা কখনোই মানতাম না। দ্বিতীয় অনুপ্রেরণা হচ্ছে আমাদের শুটিংয়ের বাড়ির ক্যারম টুর্নামেন্ট। আমি আর আমরা সব ভাই-বেরাদর এক সাথে থাকতাম সেখানে- এটা সবাই জানেন। সেই আবাসিক ক্যাম্পে আমরা আবিষ্কার করি কচি খন্দকার মোটামুটি আমার ছোটবেলার বুড়ো ভার্সন। তখন আমরা প্রতি খেলায় হারার পর কচিকে অত্যাচার করার নানা সৃজনশীল উপায় আবিষ্কার করি। এবং কচি খেপেখুপে প্রায় প্রতিদিনই আমাদের ক্যাম্প ছেড়ে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়। আমি ঠিক করলাম এই সব নিয়েই ক্যারম নামে একটা টেলিফিল্ম বানাবো। এবং কচি খন্দকারের প্রতি অত্যাচারের প্রতিদান হিসেবে তাকে স্ক্রিপ্ট রাইটার ক্রেডিট দেই। যদিও স্ক্রিপ্ট লেখা সেশনের সাথে তার আদতে কোনো সংস্পর্শ ছিলো না

তখন আমি স্ক্রিপ্ট লেখি সোফায় শুয়ে শুয়ে। লেখি না আসলে, দৃশ্য বলি! মাহমুদ আর সুজন সেটা কাগজে কপি করে। স্ক্রিপ্টের মাঝ পর্যায়ে মোশাররফ করিম আসেন আমাদের ক্যাম্পে। তাকে কাস্ট করার পর আমার ওপর চাপ বেড়ে যায়। একজন সাংবাদিক ফোন করে বললেন, বস, আপনি শিওর উনি পারবেন? উনি কিন্তু প্রমিনেন্ট কেউ না। আমি বললাম, হি উইল বি প্রমিনেন্ট প্রেটি সুন। সেই সাংবাদিক আমার ফ্রেন্ডলিস্টেও আছেন।

তারপর শুটিংয়ে যাই কুমিল্লায়। প্রথম দিন উনি খুবই চাপে ছিলেন। আমি তখন কৌশলে কম চাপওয়ালা দৃশ্যগুলা করতে থাকি। আর উনাকে আমার সিস্টেমের মধ্যে ধীরে ধীরে ঢোকাতে থাকি। এটা একটা প্রক্রিয়া যেটা শুধু রিহার্সেল করে সম্ভব না। এটা হচ্ছে একটা হোলিস্টিক অ্যাপ্রোচ। যেখানে আমরা আলোচনা করি কবিতা নিয়ে, রাজনীতি নিয়ে, দেশ নিয়ে। এইসব করতে করতে কখন যে আলগোছে আমরা একজন আরেকজনের মাথার ভেতরে ঢুকে বসে যাই। এই ঢোকাটা হয়ে গেলে, বাকিটা তো ইশারায় হয়ে যায়।

ক্যারম আর ৪২০’র পর ওই সাংবাদিক ভাইটাই আমাকে এক অনুষ্ঠানে বলে, না বস, মোশাররফ ইজ আ জিনিয়াস। 
আজকে সবাই জানে হি ইজ আ জিনিয়াস। দীর্ঘায়ু হন মোশাররফ ভাই। আর ভালো ভালো কাজ করেন। ইউ হ্যাভ আ লট টু অফার।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর