শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

রানার সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত আগামী মাসেই চার্জশিট

রানার সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত আগামী মাসেই চার্জশিট

সাভারের ধসে পড়া রানা প্লাজা ভবনের মলিক সোহেল রানার ব্যক্তিগত সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে সরকার। গতকাল ঢাকার জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। এদিকে সাভারে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ভবনের মালিক সোহেল রানা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হবে আগামী মাসেই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য জানান।

জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন জানান, গত বছরের ৩০ মার্চ ভবনের মালিক সোহেল রানা এবং ওই ভবনের কারখানাগুলোর মালিকদের সম্পত্তি হস্তান্তর বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি বিবিধ মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার তদন্তকালে রানা প্লাজার ১৮ শতাংশ, রানা টাওয়ারের ১০ শতাংশ এবং ধামরাইয়ে সোহেল রানার মালিকানাধীন ১ একর ৪৭ শতাংশ জমির খোঁজ পাওয়া যায়। গত ১৩ মার্চ আদালত তা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। পরে আদালতের আদেশ মোতাবেক সোহেল রানার মালিকানাধীন স্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার আরও কোনো সম্পদ পাওয়া গেলে তাও বাজেয়াপ্ত করা হবে। এ ছাড়া এ বিষয়ে এখন গণবিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করার জন্য বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আগামী মাসেই চার্জশিট : রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দুটি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। একটি ইমরাত নির্মাণ আইনে এবং অপরটি দুর্ঘটনা জনিত হত্যা। দুটি মামলার তদন্তই শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সিআইডির এএসপি বিজয় কৃষ্ণ কর বলেন, এর আগে দায়ের করা দুর্ঘটনা জনিত হত্যা মামলায় তারা সরাসরি হত্যার অভিযোগে রানা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেবেন। তারা তদন্তে অপরাধ প্রমাণের যথেষ্ট তথ্য ও আলামত সংগ্রহ করেছেন। প্রথমে মামলাটি দণ্ডবিধির ৩০৪/ক ধারায় দেওয়া হলেও তারা আদালতে চার্জশিট দেবেন ৩০২/৩৪ ধারায়। এই ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এই মামলায় সোহেল রানাসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রানা ও রানার বাবা ছাড়াও রানা প্লাজার পাঁচটি পোশাক কারখানার মালিক-কর্মকর্তা এবং স্প্যানিশ নাগরিক ডেভিড মেয়রসহ আটজনকে প্রাথমিকভাবে এই মামলার আসামি করা হয়েছিল। ডেভিড মেয়র রানা প্লাজা ধসের পর আর বাংলাদেশে ফিরে আসেননি। গত বছরের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৮ জন পোশাক শ্রমিক নিহত হন। তার আগের দিন ওই ভবনে ফাটল দেখা দিলেও রানা ও পোশাক কারখানার কর্মকর্তারা জোর করে শ্রমিকদের ভবনে ঢুকতে বাধ্য করেন। শ্রমিকরা ভবনে প্রবেশ করতে না চাইলে পোশাক কারখানার কর্মকর্তারা তাদের ছাঁটাই করার হুমকি দেয়। জোর করে ভবনে ঢোকানোর কিছুক্ষণ পরই ভবনটি ধসে পড়ে। যুবলীগ নেতা সোহেল রানাকে ভবন ধসের কয়েকদিন পর সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ইমারত আইনের মামলায় তিনি জামিন পেলেও হত্যা মামলায় এখনো কারাগারে আছেন।

সিআইডির এএসপি বিজয় কৃষ্ণ কর আরও বলেন, ভবনটিতে ফাটল দেখা দেওয়ার পরও জোর করে শ্রমিকদের সেই ভবনে ঢুকতে বাধ্য করা আর সেই ভবন ধসে তাদের মৃত্যু সরাসরি হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা মামলার তদন্ত কাজ শেষ করে এখন আইনগত মতামত নিচ্ছেন। মতামত পেলেই চার্জশিট দেবেন। তার আশা, ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের এক বছর পূর্তির পর চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হবে। ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, প্রাথমিক তদন্ত শেষে সিআইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর