রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পার পায়নি ওরা

ছয়জনের ফাঁসি কার্যকর আপিল মামলায় আরও একডজন যুদ্ধাপরাধী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পার পায়নি ওরা

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ২০০৯ সালে শুরু হওয়ার পর ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ২৪টি মামলার রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পলাতক আছেন। কয়েকজন আসামি বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই মারা গেছেন। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর অন্যান্য আইনি ধাপ অতিক্রম করে এখন পর্যন্ত আট যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের ভয়ঙ্কর অপরাধে করুণ পরিণতি হয়েছে ছয় জনের। এর মধ্যে পাঁচজনই শীর্ষস্থানীয় ও প্রভাবশালী জামায়াত নেতা এবং একজন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। এ ছাড়া আপিল বিভাগে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুস সুবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারেরসহ প্রায় এক ডজন মামলা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

জানা যায়, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয় প্রথম, ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে। এরপর ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে কারা কর্তৃপক্ষ। তারা রাষ্ট্রপতির ক্ষমা চাননি বলে সরকারের পক্ষ থেকে সে সময় জানানো হয়। পরে তাদের ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। এরপর জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও বিএনপির সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় একই দিনে, গত বছরের ২১ নভেম্বর। তারা প্রাণভিক্ষার আবেদন করলেও রাষ্ট্রপতি তা নাকচ করে দেন বলে সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। চলতি বছরের ১০ মে রাতে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে কারা কর্তৃপক্ষ। তিনিও প্রাণভিক্ষা চাননি। গতকাল ৩ সেপ্টেম্বর কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার-২-তে কার্যকর হয় ্বদর কমান্ডার মীর কাসেম আলীর ফাঁসি। এর বাইরে যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামিদের মধ্যে কেবল জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ে শাস্তি কমেছে আপিল বিভাগে। ট্রাইব্যুনালে তাকে দেওয়া সর্বোচ্চ সাজার রায় কমিয়ে আপিল বিভাগ আমৃত্যু কারাভোগের আদেশ দিয়েছে। এ রায় রিভিউ চেয়েছে দুই পক্ষই। রিভিউ আবেদন দুটি শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

অন্যদিকে, বর্তমানে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির দণ্ডের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আপিল বিচারাধীন রয়েছে এক ডজন যুদ্ধাপরাধীর। তারা হলেন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক হোসেন, জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম ও আবদুস সুবহান, জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা হবিগঞ্জের সৈয়দ মুহম্মদ কায়সার, সাবেক মুসলিম লীগ নেতা চাঁপাইনবাবগঞ্জের আফসার হোসেন চুটু ও মাহিদুর রহমান, পটুয়াখালীর ফোরকান মল্লিক, বাগেরহাটের সিরাজুল হক ওরফে কসাই সিরাজ, খান আকরাম হোসেন, নেত্রকোনার আতাউর রহমান ননী ও ওবায়দুল হক তাহের। এ ছাড়া ট্রাইব্যুনালের রায়ে আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত পিরোজপুরের সাবেক এমপি পলাতক জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের সাজা বৃদ্ধি তথা মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

সর্বশেষ খবর