শিরোনাম
শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

সন্ত্রাসীদের অর্থ, অস্ত্র সমর্থন দেবেন না

শাবান মাহমুদ, নিউইয়র্ক থেকে

সন্ত্রাসীদের অর্থ, অস্ত্র সমর্থন দেবেন না

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে গতকাল ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা —এএফপি

সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের অর্থ-অস্ত্র জোগান ও নৈতিক সমর্থন না দেওয়ার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বর্তমান সময়ে দুটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ— জঙ্গিবাদ ও সহিংস চরমপন্থা। এই চ্যালেঞ্জগুলো কোনো নির্দিষ্ট একটি দেশের গন্তব্যে না থেকে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। কোনো দেশ কিংবা ব্যক্তিই এর বাইরে নয়। সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম-বর্ণ কিংবা গোত্র নেই। সমূলে সন্ত্রাসবাদ উৎপাটন করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এদের পরামর্শদাতা, মূল পরিকল্পনাকারী, মদদদাতা, পৃষ্ঠপোষক, অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহকারী এবং প্রশিক্ষকদের খুঁজে বের করতে  হবে। একই সঙ্গে সন্ত্রাসী এবং উগ্রবাদীদের অর্থ ও অস্ত্রশস্ত্রের জোগান বন্ধ এবং তাদের প্রতি নৈতিক ও বৈষয়িক সমর্থন না দেওয়ার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাচ্ছি। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বিকালে অর্থাৎ বাংলাদেশ সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে ভাষণকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী তার ১৯ মিনিটের বাংলায় দেওয়া ভাষণে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ, বিশ্বশান্তির ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়নে তার সরকারের বাস্তবায়িত চিত্র তুলে ধরেন। তিনি ভাষণের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের জাতিসংঘের একটি ভাষণের অংশ তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমেরিকা থেকে ইউরোপ, আফ্রিকা থেকে এশিয়ায় অগণিত নিরীহ মানুষ সন্ত্রাসবাদের শিকার হচ্ছে। এদের সর্বোত্তভাবে সমূলে উৎপাটন করার সংকল্পে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গিবাদের মূল কারণগুলো আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ব বর্তমানে এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে, যখন এসব অভিশাপ থেকে মুক্তি খুব একটা দূরে নয়। অনেক সৃজনশীল ও প্রায়োগিক সমাধান এখন আমাদের নাগালের মধ্যে। প্রযুক্তি, নব্য চিন্তাধারা ও বৈশ্বিক নাগরিকদের বিস্ময়কর ক্ষমতা আমাদের একটি ‘নতুন সাহসী বিশ্ব’ সম্পর্কে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করছে। শেখ হাসিনা বিশ্ব পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, তবে এখনো আমাদের এই বিশ্ব উত্তেজনা ও ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে মুক্ত নয়। বেশ কিছু স্থানে সহিংস সংঘাতের উন্মত্ততা অব্যাহত রয়েছে। অকারণে অগণিত মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। যারা সংঘাত থেকে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন, প্রায়শই বিভিন্ন দেশ তাদের নিরাপত্তা দিতে অস্বীকার করছে। কখনো কখনো অত্যন্ত জরুরি মানবিক চাহিদা অগ্রাহ্য করা হচ্ছে অথবা সেগুলো প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, কী অপরাধ ছিল সাগরে ডুবে যাওয়া সিরিয়ার ৩ বছর বয়সী নিষ্পাপ শিশু আয়লান কুর্দির? কী দোষ করেছিল ৫ বছরের শিশু ওমরান, যে আলেপ্পো শহরে নিজ বাড়িতে বসে বিমান হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। একজন মা হিসেবে আমার পক্ষে এসব নিষ্ঠুরতা সহ্য করা কঠিন। বিশ্ব বিবেককে কি এসব ঘটনা নাড়া দেবে না? তিনি বলেন, নিজে একজন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হিসেবে সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে বিশ্বাসী। আমাদের দেশে যেসব সন্ত্রাসী গ্রুপের উদ্ভব হয়েছে, তাদের নিষ্ক্রিয় করা, তাদের নিয়মিত অর্থ সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম নির্মূল করার ক্ষেত্রে আমাদের সরকার সফল হয়েছে। কয়েকটি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্রের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় কিছু প্রান্তিক গোষ্ঠী তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে পুনঃ সংগঠিত হওয়ার মাধ্যমে নতুনরূপে আবির্ভূত হয়ে থাকতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। গত ১ জুলাই আমরা এক ঘৃণ্য সন্ত্রাসী হামলার শিকার হই। ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয় কিছু দেশীয় উগ্রপন্থি সন্ত্রাসী ২০ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এ সময় ১৩ জন জিম্মিকে আমরা উদ্ধার করতে সমর্থ হই। এই ভয়ঙ্কর ঘটনা বাংলাদেশের জনগণের মনে এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা এই নতুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করতে এবং এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এতে সাড়া দেওয়ার জন্য আমি সমগ্র জাতির প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। আমরা সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, জনগণের দৃঢ়তা ও সহযোগিতায় আমরা বাংলাদেশের মাটি থেকে সন্ত্রাসীদের সমূলে উচ্ছেদ করতে পারব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়ন উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে আমরা বেশ কিছু বৃহদাকার অবকাঠামো প্রকল্প গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত এবং নেপাল (বিবিআইএন)-এর মধ্যে বাণিজ্য এবং নাগরিকদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য মাল্টি-মোডাল ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে আমরা ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ করছি। একটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের আলোচনা চলছে। তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রাজধানী ঢাকা শহরে মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্ভবত বাংলাদেশ বর্তমানে পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার এবং সংসদ উপনেতা সবাই নারী। চলমান জাতীয় সংসদে আমাদের ৭০ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন, যা সংসদের মোট আসনের ২০ শতাংশ। ১২ হাজার ৫শ’র বেশি নির্বাচিত নারী প্রতিনিধি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় কাজ করছেন।

আগুন সন্ত্রাসের হুকুমের আসামি খালেদা জিয়ারও বিচার হবে : নিউ ইয়র্কে স্থানীয় সময় বুধবার রাতে গ্র্যান্ড হায়াৎ হোটেলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ প্রদত্ত নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের হত্যার বিচার চলছে, কাজেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে সব হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা করব। আগুন সন্ত্রাসীদেরও বিচার বাংলার মাটিতে হবে। তিনি বলেন, হুকুমের আসামি হিসেবে খালেদা জিয়াকেও একদিন বাংলার মাটিতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন তারা (বিএনপি) আবার রাজনীতিতে স্পেস চায়। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে টানা ৯২ দিনের আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, মানুষের জানমালের ক্ষতির জন্য যদি দেশীয় আইনে কারও বিরুদ্ধে মামলা হয়, তো হতেই পারে। তাকে রাজনৈতিক মামলা বলা যায় কি, প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আসলে স্পেস নয়, কৃত অপরাধের জন্য তাদের জেলে যাওয়া উচিত। তখন অ্যারেস্ট করা হয়নি সেটাই তার ভাগ্য (খালেদা জিয়ার)। তবে, একদিন এই অপরাধে খালেদা জিয়ার বিচারও বাংলার মাটিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের দেশের বিরুদ্ধে বিরোধী মহলের অপপ্রচার সম্পর্কে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যে যেখানেই থাকেন সেখানকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বাস্তব চিত্রটা তুলে ধরবেন। এটা করার জন্য আমি আপনাদের সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তাহলে আর কেউ আমাদের দেশ সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়ে আর দেশের ভাবমূর্তি সংকটে ফেলতে পারবে না। বিদেশিদের পাশাপাশি আমি প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও আহ্বান জানাব, বাংলাদেশের অর্থনীতি অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসুন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহি চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে বক্তৃতা শেষে প্রধানমন্ত্রী এই নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেন। এতে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কের বাইরে ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে হাজারো আওয়ামী লীগ সমর্থক ও নেতা-কর্মীরা সংবর্ধনাস্থল গ্র্যান্ড হায়াতে ভিড় করেন।

প্রধানমন্ত্রীর ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে তার অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করেছেন। জাতিসংঘ সদর দফতরে বুধবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘ প্লাজায় তাকে দেওয়া এক উচ্চপর্যায়ের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ তার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে জাতিসংঘ উইমেন স্বীকৃতি পেলেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি মাল্টার প্রেসিডেন্ট মারিয়ে লুইস কোলিরো প্রেসা ও জাতিসংঘের ফার্স্টলেডি বান সুক তায়েককেও এই ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ উইমেন ডেপুটি ডিরেক্টর লক্ষী পুরি শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এবং অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের উদ্দেশ্যে সম্মাননাপত্র পাঠ করেন। 

এ পুরস্কার বাংলার নারীদের স্বীকৃতি : নারীর ক্ষমতায়নে অবদানের জন?্য ‘প্ল?্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ার পর তা বাংলাদেশের মানুষকে উৎসর্গ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এ পুরস্কার আমাদের নারীদের জন?্য এক স্বীকৃতি, যারা আমাদের পুরুষদের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে চলেছে। এই পুরস্কার আমি বাংলাদেশের মানুষকে উৎসর্গ করছি, যারা আমার পরিবর্তনের দর্শনকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। পুরস্কার নেওয়ার পর শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে নারীরাই যে ‘পরিবর্তনের দূত’, এই পুরস্কার তারই স্বীকৃতি বলে মন্তব?্য করেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন?্যা শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এই পৃথিবীর জন?্য একটি টেকসই ভবিষ?্যৎ গড়ে তোলা নারী-পুরুষ সবার দায়িত্ব। মানব ইতিহাসের এমন এক সময়ে আমরা পৌঁছেছি, যখন নারী-পুরুষের সমান অধিকার কেবল আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবে পরিণত হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের পথ সব সময় সহজ ছিল না। কিন্তু সাহস আর ঐকান্তিক চেষ্টার মধ?্য দিয়েই লক্ষে?্যর দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমি সেই পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি, যেখানে নারীর অধিকার সবার সম্মান পাবে। নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম?্য ও সহিংসতা যেখানে হবে ইতিহাস।  

আন্তঃসীমান্ত জলাধারের সুষম বণ্টন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী : বুধবার জাতিসংঘ সদর দফতরে পানি (এইচএলপিডব্লিউ) বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পানিকে নতুন উন্নয়ন কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করে আন্তঃসীমান্ত জলাধারের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নদী অববাহিকায় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা এবং পানি সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ কার্যকর মোকাবিলায় পানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি সুবিধার উন্নয়নসহ আমাদের আন্তঃসীমান্ত জলাধারের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

ব্যবসায়িক রীতির অঙ্গীকার রক্ষা করতে বিশ্বের স্টেকহোল্ডারদের প্রতি আহ্বান : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ, ন্যায্যমূল্য ও উন্নয়ন অর্থায়নের সুযোগদানের ক্ষেত্রে দেওয়া অঙ্গীকার রক্ষায় বিশ্বের স্টেকহোল্ডারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে জাতিসংঘ সদর দফতরে ডিসেন্ট ওয়ার্ক অ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ বিষয়ক সোস্যাল ডায়লগ সংক্রান্ত গ্লোবাল ডিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে সব ক্ষেত্রে অভিন্ন দায়িত্বশীলতা হিসেবে ব্যবসাকে যদি গণ্য করা হয় তাহলে আমরা আরও লাভবান হব। সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লো ফেভেন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। উন্নয়নকে ‘যৌথ উদ্যোগ’ হিসেবে বর্ণনা করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে পারস্পরিক সমৃদ্ধ সংলাপের সুযোগ দিতে একটি বলিষ্ঠ প্রক্রিয়া উদ্ভাবনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘সরকার, মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে উৎপাদনশীল সম্পর্ক উন্নয়নের পূর্বশর্ত, এটি একটি যৌথ উদ্যোগ এবং এ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক, শর্তানুগ ও যত্নবান হতে হবে।

সর্বশেষ খবর