কক্সবাজারের টেকনাফে স্থানীয় মোট জনসংখ্যা ২ লাখ ৮২ হাজার। উখিয়ায় ২ লাখ ৭০ হাজার। কিন্তু গত দেড় মাসেই এ দুই উপজেলায় ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান গ্রহণ করছে। এর আগে থেকেই আরও ৫ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস রয়েছে এ দুই উপজেলায়। যারা সত্তরের দশক থেকে বিভিন্ন সময়ে এখানে অনুপ্রবেশ করেছে। টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার স্থানীয় জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পরিমাণ। দ্বিগুণের বেশি রোহিঙ্গা দুই উপজেলায়। এ ছাড়া বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থানায়ও অবস্থান করছে বেশ কিছু রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গাদের তুলনায় স্থানীয়রা হয়ে পড়েছে সংখ্যালঘু। কক্সবাজারের গুরুত্বপূণ এ দুই উপজেলা কবে স্বাভাবিক হবে তা নিয়েও সংশয়ে স্থানীয় সর্বসাধারণ। অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের কুতুপালং ও বালুখালীর নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, রোহিঙ্গাদের বাড়তি চাপে তাদের নাভিশ্বাস পরিস্থিতি। এক দিন-দুই দিন কিংবা পাঁচ-দশ দিন এটা বহন করা যায়। কিন্তু দিনের পর দিন মাসের পর মাস এ ভার বহন করা খুবই কঠিন। ভিন্ন সামাজিক ও সংস্কৃতির মানুষ হওয়ায় রোহিঙ্গাদের প্রভাব পড়ছে তাদের হাজার বছরের ঐতিহ্যে। আবার পরিবেশ ও বন নিধনের ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য। এ ছাড়া জীবন-জীবিকায়ও রোহিঙ্গারা প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। বিশেষ করে হাটবাজারে এখন আর কোনো তরিতরকারি পাওয়া যায় না। ইচ্ছা করলেই যেখানে-সেখানে যাতায়াত করা যায় না। জনসংখ্যার যানবাহন খুবই কম। এ ছাড়া বাচ্চাদের মধ্যেও রোহিঙ্গাভীতি কাজ করছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার অমানসিক যন্ত্রণার গল্প শুনে কোমলমতি শিশুরাও আঁতকে উঠছে। স্কুল-কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও পড়াশোনায় প্রভাব পড়ছে। বিদ্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থানকেও শিশুরা ভয়ের চোখে দেখছে। তাদের মধ্যে স্বাভাবিক চলার গতি থেমে গেছে। এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় ত্রাণ তত্পরতা চালাতে প্রতিদিনই উখিয়া-টেকনাফে ভিড় করছেন সারা দেশ থেকে আসা প্রচুর মানুষ। ত্রাণ দেওয়ার পাশাপাশি অনেকেই আসছেন তাদের দুঃখ-দুর্দশা নিজের চোখে দেখতে। তাদের বেশির ভাগই কয়েক দিন অবস্থান করছেন সেখানে। এ কারণে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে দেখা দিয়েছে পরিবহন সংকট। রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও যানবাহন মিলছে না কারও। পরিবহন সংকটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভাড়া। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা একটি মানবিক বিষয়। এই মানবিকতার কারণে অনেক ভোগান্তি সহ্য করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আমার ইউনিয়নে স্থায়ী বাসিন্দার সংখ্যা যেখানে ৫০ হাজার সেখানে ৮ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান নেওয়ার পর কী ধরনের সমস্যা হতে পারে তা আন্দাজ করতে পারেন। ইউনিয়নের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এখন কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান খুললেও পড়াশোনার পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। কিছু দিন পরই, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি, দাখিলসহ নানা পাবলিক পরীক্ষা। রোহিঙ্গায় প্রভাব পড়বে ছেলেমেয়েদের। তিনি বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে কিন্তু রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলো স্থানীয়দের বিষয়টি বিবেচনায় রাখছে না। তারা স্থানীয় শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের কাজের সুযোগ দিচ্ছে না। অথচ বাইরে থেকে তারা লোক নিয়োগ করছে।
শিরোনাম
- সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
- ইলিশের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো যাবে না : মৎস্য উপদেষ্টা
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারে শুরু জুলাইয়ে
- ‘ভারতের অন্যায় আবদারের কাছে আমরা মাথানত করবো না’
- নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে : নায়াব ইউসুফ
- চাঁদা আদায় বন্ধের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
- রায় মেনে ভারতকে সিন্ধু পানি চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানাল পাকিস্তান
- ভোটকেন্দ্র নীতিমালার গেজেট প্রকাশ, ডিসি-এসপির কমিটি ও ইভিএম বাদ
- গাজা যুদ্ধে সেনা হতাহতের সংখ্যা জানাল ইসরায়েল
- সাজা মওকুফ হওয়ায় মুক্তি পেলেন যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া ১৩ আসামি
- মঙ্গলবার থেকে আমদানি-রফতানির সব সনদ অনলাইনে জমা বাধ্যতামূলক
- ‘জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে দ্রুত সময়ে নির্বাচনের ঘোষণা সরকার’
- এবার নিউইয়র্কের তহবিল বন্ধের হুমকি দিলেন ট্রাম্প
- স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘মমতা’ প্রকল্প বন্ধের খবরে দুশ্চিন্তায় চরাঞ্চলের প্রসূতিরা
- ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করেছে সরকার
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
- বিএম কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা
- আমেরিকায় যেভাবে ভয়ানক আসক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘লাফিং গ্যাস’
- দল নিবন্ধন : আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে ইসির ৭ কর্মকর্তা
- বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মতবিনিময় সভা
টেকনাফ ও উখিয়ায় এখন রোহিঙ্গারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, উখিয়া (কক্সবাজার) থেকে
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর