বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বইয়ের সঙ্গে দূরত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের

—অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান

বইয়ের সঙ্গে দূরত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, দিনে দিনে প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপকতা বাড়ছে। প্রশ্ন ফাঁসের ফলে ছাত্রছাত্রীদের বইয়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। প্রশ্ন ফাঁসের কারণে শিশুরা পড়াশোনা বন্ধ করে দিচ্ছে। কারণ, তারা পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন পেয়ে যাচ্ছে। কষ্ট করে লেখাপড়ার প্রয়োজন হচ্ছে না। এতে তাদের মধ্যে ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে শৈশব থেকেই দুর্নীতির মাধ্যমে বড় হয়ে উঠছে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। এ শিক্ষাবিদ আরও বলেন, কিছু নীতিহীন মানুষ ব্যবসার জন্য প্রশ্ন ফাঁস করছে। পরীক্ষার আগে প্রশ্ন বাইরে পাঠিয়ে টাকা বানাচ্ছে সংঘবদ্ধ চক্র। শিক্ষকদের সংশ্লিষ্টতায়ই প্রশ্ন ফাঁস বেশি হচ্ছে। আগে বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস হতো। এখন আর সেখান থেকে প্রশ্ন ফাঁস হয় না। শিক্ষকরা পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্নপত্র খুলে মোবাইলে ছবি তুলে বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আর এভাবেই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন। আবার বাইরে থেকে শিক্ষকদের একটি গ্রুপ এসব প্রশ্নের সমাধান করে দিচ্ছেন। এই শিক্ষকদের ‘কলঙ্ক’ উল্লেখ করে এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন তিনি। ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, এই শিক্ষকরা জাতির ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে। কোমলমতি শিশুরা তো এজন্য দায়ী নয়। শিক্ষকদের কাছেই ছাত্ররা দুর্নীতি শিখছে। সংসদে আইন করে এদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ, এরা জাতির জন্য ভয়ঙ্কর। অন্য কোনো পেশায় দুর্নীতি হলে কিছু অংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু শিক্ষাখাতে প্রশ্ন ফাঁস হলে পুরো জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যাবে। এ শিক্ষা গবেষক আরও বলেন, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে একাডেমিক সার্টিফিকেটের চেয়ে নৈতিকতা আর মূল্যবোধের দিকে নজর দেওয়া জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সর্বশেষ খবর