রবিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

মাথায় অস্ত্রোপচার করতে হবে রাজীবের ভালো নেই আয়েশা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জোরালো আঘাতে রাজীবের মাথায় জমে যাওয়া রক্ত ও পানি বের করতে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড। এ অস্ত্রোপচারের আগে তাকে শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না।

গতকাল গঠিত সাত সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান জানান, রাজীবের সিটি স্ক্যান রিপোর্ট পাওয়ার পর আমাদের শঙ্কা বেড়ে যায়। তার মাথার সামনের অংশে আঘাত পাওয়ায় রক্ত ও পানি জমে আছে। এর জন্য প্রয়োজন অস্ত্রোপচার। কিন্তু তা এখনই সম্ভব নয়। এ কারণে তাকে এখনো শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। গত ৩ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের দরজায় দাঁড়িয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন। বাসটি হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে গা ঘেঁষে অতিক্রম করে। এ সময় দুই বাসের মাঝে প্রবল চাপে রাজীবের ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এদিকে ভালো নেই আয়েশাও। এখনো তার আগের চিকিৎসাগুলো বহাল রয়েছে। গতকালও হাসপাতালের বেডে অনবরত তার চোখ দিয়ে পানি ঝরে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। তিনি ধানমন্ডির বেসরকারি হাসপাতাল ল্যাব এইডের হাইকেয়ার ইউনিটের ১৯ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটে বেপরোয়া দুই বাসের চাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। মেয়ে আহনাব আহমেদকে (৬) বাঁচাতে মা নিজেই এমন পরিস্থিতি বরণ করে নেন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, এ ধরনের চিকিৎসায় সাফল্যের হার খুবই কম। চিকিৎসাও অনেক ব্যয়বহুল। হাঁটা চলা তো দূরের কথা আর কোনোদিনই হয়তো তিনি উঠে বসতে পারবেন না। তার মেরুদণ্ড লোহার রড দিয়ে সোজা করে রাখা হয়েছে।  জানা গেছে, গত বুধবার সকালে ৩০ নম্বর লালবাগের বাসা থেকে মেয়ে আহনাব আহমেদকে (৬) নিয়ে রিকশায় ধানমন্ডির স্কলারস কিন্ডার গার্টেনে যাচ্ছিলেন মা আয়েশা খাতুন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে আসতেই বিকাশ পরিবহনের দুটি বাসের প্রতিযোগিতায় মাঝখানে পড়ে যায় মা-মেয়েকে বহন করা রিকশাটি। বাঁচার জন্য মা-মেয়ের আর্তচিৎকারও চালকদের মন গলাতে পারেনি। বাস থামানোর চেষ্টা না করে তারা উল্টো সামনের দিকে টানতে থাকে। মায়ের নাড়ি ছেড়া ধন শিশু সন্তানকে রক্ষা করতে নিজেকেই সঁপে দেন মমতাময়ী মা। মা-মেয়ের চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা এক পর্যায়ে বাস দুটিকে থামাতে সক্ষম হন। গুরুতর অবস্থায় মা ও মেয়েকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা।

সর্বশেষ খবর