মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মিন্নির মুক্তিতে বাধা নেই

এবার নিয়মিত আপিলে যাবে রাষ্ট্রপক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিন্নির মুক্তিতে বাধা নেই

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন আটকাতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে গিয়েও সাড়া পায়নি রাষ্ট্রপক্ষ। মিন্নির জামিন স্থগিতের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ যে আবেদন করেছিল, তা শুনে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বার আদালত গতকাল ‘নো অর্ডার’ দিয়েছে। আর এর ফলে কলেজছাত্রী মিন্নির জামিন বহাল থাকছে এবং মুক্তিতে কোনো বাধা থাকছে না বলে তার আইনজীবী জেড আই খান পান্না জানিয়েছেন। পান্না ছাড়াও চেম্বার আদালতে মিন্নির পক্ষে শুনানি করেন এ এম আমিন উদ্দিন ও মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। এ সময় মিন্নির পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারোয়ার কাজল ও মো. সারোয়ার হোসাইন বাপ্পী। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে উপস্থিত থাকলেও শুনানি করেননি।

চেম্বার আদালতের সাড়া না পেলেও মিন্নির জামিনের বিরুদ্ধে নিয়মিত আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারোয়ার কাজল। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘মিন্নির জামিন-সংক্রান্ত মামলায় হাই কোর্টের রায় হাতে না পাওয়ায় আমরা ওই রায় স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে একটি মিস পিটিশন (বিবিধ আবেদন) দায়ের করেছিলাম। কিন্তু চেম্বার আদালত নো-অর্ডার দিয়েছে। তবে এরই মধ্যে রবিবার মিন্নিকে জামিন দেওয়া হাই কোর্টের রায় প্রকাশিত হওয়ায় আমরা এখন নিয়মিত আপিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি নোট জমা দিয়েছি।’

এর আগে ২৯ আগস্ট বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ দুই শর্তে মিন্নিকে জামিন দেয়। জামিনের আদেশে হাই কোর্ট বলেছে, ‘তদন্ত প্রক্রিয়া যেহেতু শেষের দিকে এবং এ অবস্থায় তদন্ত প্রভাবিত করার কোনো সুযোগ নেই, তাই আমরা জামিন মঞ্জুর করলাম।’ ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। এরপর গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন বিকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন, যেখানে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করা হয়। এরপর ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইনসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একই দিন রাত ৯টায় তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। পরদিন মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এরপর কয়েক দফা আবেদন জানালেও নিম্ন আদালতে জামিন মেলেনি মিন্নির। পরে একই মামলায় জামিন চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন মিন্নির আইনজীবীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর