রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

জাবি ভিসির ৭০ পৃষ্ঠার দুর্নীতির প্রতিবেদন জমা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের দুর্নীতির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৭০ পৃষ্ঠার তথ্য-উপাত্ত জমা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার রাতে তারা এসব তথ্য-উপাত্ত জমা দেন। তবে জাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ অবান্তর বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। গতকাল দুপুরে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিকে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে আজ এবং আগামীকাল দুই দিনের বিরতি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল সারা দিনের কর্মসূচি শেষে রাত ৮টায় এই ঘোষণা দেন তারা। শিক্ষা উপমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে আন্দোলনকারী শিক্ষক খন্দকার হাসান মাহমুদ গতকাল সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, অর্থ যদি ছাড় না হয় তাহলে কাজ চলছে কীভাবে? টাকা ছাড়ের সঙ্গে তো দুর্নীতির সম্পর্ক নেই। দুর্নীতির সম্পর্ক ঠিকাদার ও প্রশাসনের সঙ্গে। নিয়ম হলো সরকারি টেন্ডারের কাজ শেষ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টাকা পাবে। সুতরাং দুর্নীতির জন্য টাকা ছাড়ের প্রয়োজন হয় না। উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিকাল ৫টার দিকে অঙ্কিত ৬০ গজ ‘পটচিত্র’ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। বিকাল ৫টার দিকে কলা ও মানবিকী অনুষদের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে কিছুক্ষণ পটচিত্রটি প্রদর্শন করে মিছিলটি আবার একই অনুষদ ভবনের সামনে শেষ হয়।

কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের কথা ছিল ৮ তারিখে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার। আমরা কষ্ট করে হলেও সেটি নির্দিষ্ট সময়ে জমা দিয়েছি। হয়তো শিক্ষা উপমন্ত্রীর কাছে তথ্যের ঘাটতি রয়েছে।’ তদন্ত চলাকালীন উপাচার্যের পদত্যাগ চাইবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হাসান মাহমুদ বলেন, ‘যখন কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত হয় তখন তাকে তার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। জাবির শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো গুরুতর অভিযোগ তদন্ত করার সময়ও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাই তদন্ত চলাকালে উপাচার্যকেও অব্যাহতি দিতে হবে। না হলে তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েই যাবে। আন্দোলনে শিক্ষকদের কম উপস্থিতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে উপাচার্যের পদত্যাগসহ ২০টি দাবি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেছি। একাডেমিক, সিনেট ও সিন্ডিকেটের নির্বাচনেও আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছি। সুতরাং আমাদের দাবিতে অধিকাংশ শিক্ষকের সমর্থন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই এখন কোনো আন্দোলন চলতে পারে না। এটা আইনের লঙ্ঘন। যেহেতু সরকার এখানে সরাসরি অনুসন্ধান করছে। তাই সরকারের প্রতি সবার আস্থা রেখে আন্দোলন প্রত্যাহার করে ঘরে ফেরা উচিত।’ আন্দোলনকারীদের দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজেরা বিনিয়োগ করে কাজ শেষে বিল করার পর সরকার টাকা ছাড় করে। সুতরাং এখন যে কাজ হচ্ছে তা ঠিকাদারের নিজস্ব অর্থায়নে। এখানে প্রকল্পের মূল বাজেটের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। প্রক্টর আরও বলেন, সরকার উদ্যোগ নিয়ে আওয়ামী লীগের সবাইকে একত্রিত করেছেন। কিছু সংখ্যক শিক্ষক সাড়া না দিয়ে বিরোধিতা করছেন।

সর্বশেষ খবর