মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের আকস্মিক পদত্যাগে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। দুই বছর আগের সমাঝোতা অনুসারে আনোয়ার ইব্রাহিমের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে বাধা তৈরি মতলবে মাহাথিরের রাজনৈতিক মিত্ররা সরকারের পতন ঘটাতে চাইছে, এটা জানার পর তিনি ইস্তফা দেন।
৯৪ বছর বয়সী মাহাথির ও ৭২ বছর বয়সী আনোয়ার কয়েক দশক ধরে মালয়েশিয়ার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। এই দুই প্রভাবশালী নেতার জোট ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছিল। মাহাথির দুই বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর ২০২০ সালে আনোয়ারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন এমন প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে তাদের জোট গঠিত হয়েছিল।
বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, মাহাথির সোমবার দুপুরে তার পদত্যাগপত্র মালয়েশিয়ার রাজার কাছে পেশ করেন। রাজা পদত্যাগপত্র গ্রহণের পর ‘নতুন প্রধানমন্ত্রী’ নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত মাহাথিরকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন।
মাহাথির তার নিজের দল বেরসাতু’র সভাপতির পদও ত্যাগ করেছেন। এরফলে মালয়েশিয়া সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয় অস্পষ্টতা।
নাটকের সূচনা রবিবারে। সেদিন সবাইকে বিস্মিত করে মালয়েশিয়ার ক্ষমতাসীন জোট ‘পাকাতন হারাপন’-এর সঙ্গে বিরোধী দলগুলোর আলোচনা শুরু হওয়ার পর ক্ষমতাসীন জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। কয়েকটি রাজনৈতিক পক্ষের এই আলোচনায় মাহাথিরের উত্তরসূরি বলে বিবেচিত আনোয়ার ইব্রাহিমকে বাদ রেখে নতুন সরকার গঠনের কথাবার্তা হয়েছে। অন্যান্য দলের সমর্থন নিয়ে মাহাথির নতুন আরেকটি সরকার গড়বেন কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার হয়নি। কিন্তু তার দল বেরসাতুও পাকাতন হারাপন জোট থেকে বের হয়ে গেছে বলে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন জানিয়েছেন। রবিবার আনোয়ার ইব্রাহিম অভিযোগ করে বলেছিলেন, সাবেক ক্ষমতাসীন দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও)কে সঙ্গে নিয়ে মাহাথিরের দল বেরসাতু ও তার নিজ দলের ‘বিশ্বাসঘাতকরা’ নতুন একটি সরকার গঠনের ষড়যন্ত্র করছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নতুন একটি জোট গঠনের উদ্যোগে মাহাথিরের পার্টি ও আনোয়ারের পার্টির একটি অংশ ইউএমএনও ও ইসলামিক দল পিএএস-র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে এবং তারা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুরো পাঁচ বছর দায়িত্বপালনের জন্য মাহাথিরকে সমর্থন দিতে পারেন, এমন সম্ভাবনা আছে।