শুক্রবার, ১৫ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

স্পেশাল আর কার্গো ফ্লাইটে চেনারূপে শাহজালাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্পেশাল ও কার্গো ফ্লাইট ওঠানামায় চেনারূপে ফিরছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। আগামী সপ্তাহে আরও কয়েকটি এয়ারলাইনসের কার্গো ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এ অবস্থায় ঈদের আগেই স্বরূপে ফিরছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বেবিচকসূত্র জানান, গত দুই দিনে কুয়েত, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে প্রায় ৯০০ যাত্রী আসা-যাওয়া করেছেন। বিলম্বিত ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন কুয়েতের বন্দীশিবিরে আটকে পড়া ৩ শতাধিক যাত্রী। গতকালও চিকিৎসা ও অন্যান্য উদ্দেশ্যে গিয়ে লকডাউনের কারণে ভারতে আটকে পড়া আরও ৪৮২ জন বাংলাদেশি তিনটি বিশেষ ফ্লাইটে গতকাল দেশে ফিরেছেন। থাই লায়ন এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করেছেন ১৯৭ থাই নাগরিক। আজ আমেরিকা থেকে বিশেষ ফ্লাইটে ফিরছেন ৩৫০ বাংলাদেশি। এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচলের নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা আবার বাড়ানো হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩০ মে পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক আকাশপথে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ-বেবিচক। নিয়মিত যাত্রীবাহী ফ্লাইট বন্ধ থাকলেও বিশেষ ও কার্গো ফ্লাইট আসা-যাওয়া করায় শাহজালাল বিমানবন্দরের স্থবিরতা কাটতে শুরু করেছে। গত বুধবার বেলা ১১টায় এয়ার ইন্ডিয়ার একটি স্পেশাল ফ্লাইটে ঢাকায় বসবাসরত ভারতের ১৬৯ নাগরিক শ্রীনগরের উদ্দেশে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। তারা সবাই কাশ্মীরি। এদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবী। দুপুর ১২টায় মালিন্দো এয়ারের ফ্লাইটে ৭০ মালয়েশিয়ান নাগরিক ঢাকা ত্যাগ করেন। তার বেশির ভাগই ব্যবসায়ী। বিকালে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরের ১৫ নাগরিক দেশে ফিরে গেছেন। এর বেশির ভাগই ছিলেন ঢাকায় বসবাসরত ব্যবসায়ী। একইভাবে দেশে ফিরে এসেছেন ৯ শতাধিক বাংলাদেশি। মালয়েশিয়া থেকে ফিরেছেন ১৭৮ বাংলাদেশি। তারা আসেন মালিন্দোর স্পেশাল ফ্লাইটে। এর পরই আসেন সিঙ্গাপুর থেকে আরও ২২০ বাংলাদেশি। ওই ফ্লাইটেই দেশে ফেরেন খ্যাতনামা গায়ক এন্ড্রু কিশোর। বাংলাদেশিরা করোনার ভয়ে সিঙ্গাপুর ছেড়ে ঘরে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন কজন যাত্রী। বিকালে আসেন চেন্নাইয়ে আটকে পড়া ১৬৪ যাত্রী। ইউএস বাংলার একটি স্পেশাল ফ্লাইটে তাদের আনা হয়। তারা সেখানে চিকিৎসা করতে গিয়ে আটকা পড়েন। এ ছাড়া আগের রাতে দেশে ফিরে আসেন কুয়েতের বন্দীশিবিরে আটক ৩ শতাধিক বাংলাদেশি। জাজিরা ও কুয়েত এয়ারের দুটো পৃথক ফ্লাইটে তারা দেশে ফেরেন। প্রায় দেড় মাস সেখানকার ক্যাম্পে আটকে পড়া অবস্থায় তারা দেশে ফেরার জন্য সেখানে বিক্ষোভ করেন। এ ছাড়া অনাহারে-অর্ধাহারে মারা গেছেন দুই বাংলাদেশি। বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ উদ্যোগে তাদের ফিরিয়ে আনা হয়। এ বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, বিদেশ থেকে আগত যাত্রী সবাই ছিলেন সুস্থ। তারা সবাই স্বাস্থ্যসনদ নিয়েই ফ্লাইটে ওঠেন এবং দেহের তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিক। সেজন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের পরিবর্তে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

৩০ মে পর্যন্ত যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল বন্ধ : করোনাভাইরাসের কারণে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচলের নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা আবার বাড়ানো হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৩০ মে পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক আকাশপথে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বেবিচক। গতকাল বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানের বরাত দিয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। অবশ্য চীনের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চালু থাকবে। বেবিচকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহনের নিষেধাজ্ঞা আগের মতো বাহরাইন, ভুটান, হংকং, ভারত, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, ইউএই, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে বিমান চলাচল নিষেধাজ্ঞা ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানোর কথা জানায় বেবিচক। তবে কার্গো, ত্রাণ-সাহায্য, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি অবতরণ ও স্পেশাল ফ্লাইট পরিচালনার কার্যক্রম চালু থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর