রবিবার, ৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ভিড়ে ঠাসা ঈদমার্কেট

নিজস্ব প্রতিবেদক

লকডাউনে কিছুদিন বন্ধের পর শপিং মল ও মার্কেট খুলে দিলেও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মার্কেটে ছিল না ক্রেতার ভিড়। গণপরিবহন চালুর পাশাপাশি ঈদের সময় ঘনিয়ে আসায় ঈদ কেনাকাটা করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে মানুষ। গত দুই দিনই রাজধানীর মার্কেট ও শপিং মলগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। গাদাগাদি করে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে মানুষকে। দোকানের মধ্যে ও মার্কেটের রাস্তাগুলোতে ছিল না হাঁটার জায়গাও। অধিকাংশ মার্কেটেই উপেক্ষিত ছিল স্বাস্থ্যবিধি। অনেকে মাস্ক পরলেও তা ছিল শুধু নিয়ম রক্ষার। শারীরিক দূরত্ব বলতে কিছুই ছিল না।

গতকাল সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মল ও মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, বড় বড় শপিং মলগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বসানো হয়েছে জীবাণুনাশক টানেল। অনেক মার্কেটের সামনে মাস্ক পরে মার্কেটে ঢোকার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। তবে অধিকাংশ মার্কেটেই রাখা  হয়নি এমন কোনো ব্যবস্থা। এ ছাড়া ভিড়ের কারণে মার্কেটগুলোতে দেখা যায়নি শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করে অবস্থান বা চলাচল।  ক্রেতাদের ভিড় বেশি থাকায় এবং বিক্রি ভালো হওয়ায়  দোকানিদের মধ্যেও ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা। সরকার ও মার্কেট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মানতে অধিকাংশ  ক্রেতা মাস্ক পরলেও কারও থুঁতনিতে, কারও নাকের নিচে নামানো ছিল মাস্ক। ঝুঁকি নিয়ে এই কেনাকাটায় বড়দের সঙ্গে দেখা গেছে অনেক শিশুকেও। এদিকে মার্কেটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে কেনাকাটা এবং ফেরি ও যানবাহনে গাদাগাদি করে বাড়ি ফেরার কারণে আবারও করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এখনই এর প্রভাব দেখা না গেলেও জুন মাসের শেষ দিকে এই অসচেতনতার জন্য আমাদের বড় মূল্য দিতে হতে পারে।

গতকাল নিউমার্কেট, চন্দ্রিমা, গাউসিয়া, চাঁদনী চকসহ বেশ কিছু মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে একজনের সঙ্গে আরেকজনের ধাক্কাধাক্কির অবস্থা। প্রতিটি দোকানের সব চেয়ারে ক্রেতারা বসে পণ্য  দেখছেন। অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন আরও কয়েকজন। প্রবেশ পথেও নেই কোনো সুরক্ষা সামগ্রী। ক্রেতাদের মধ্যেও দেখা যায়নি করোনা সংক্রমণ নিয়ে কোনো শঙ্কা বা সচেতনতা। অনেকেই মাস্ক ছাড়া শপিং করছিলেন। কেউ মাস্ক পরলেও তা ছিল থুঁতনিতে নামানো। গতকাল তিন সন্তান নিয়ে মিরপুর থেকে নিউমার্কেট এলাকায় ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছিলেন ফাহমিদা মিতু। নিজের বা সন্তানদের কারও মুখে ছিল না মাস্ক। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কপালে মৃত্যু থাকলে হবেই। মাস্ক দিয়ে ঠেকানো যাবে না।’ এদিকে ক্রেতা সমাগমের কারণে মার্কেটগুলোর সামনের রাস্তাতেও গতকাল দেখা দেয় দীর্ঘ যানজট। অনেকদিন কাজ বন্ধ থাকায় শেষ সময়ে বিক্রির আশায় হকাররাও ফুটপাথগুলোতে সাজিয়ে বসেছে পণ্যের পসরা। সর্বত্রই ছিল লোকে লোকারণ্য। ফুটপাথের দোকানগুলোয় নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের কেনাকাটায় ব্যস্ত দেখা গেছে। হাতিরঝিলের গুদারাঘাট এলাকায় ফুটপাথের কাপড় নিয়ে বসা সোলায়মান হোসেন বলেন, অনেক দিন বেচাকেনা নেই। এখন কিছু ক্রেতা আসছে। তবে মানুষ এখন অনেক বেশি দরাদরি করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর