বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

তিন আসনে উপনির্বাচনে লড়াইয়ে ১৪ জন প্রার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা-১৪, সিলেট-৩ ও কুমিল্লা-৫ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ বেশ কয়েকটি দল অংশ নিচ্ছে। গতকাল এই তিন আসনের নির্বাচনে অংশ নিতে ১৪ জন প্রার্থী সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা-১৪ আসনে ছয়জন, সিলেট-৩ আসনে ছয়জন ও কুমিল্লা-৫ আসনে দুজন প্রার্থী রয়েছেন। তফসিল অনুযায়ী গতকাল ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। কাল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৩ জুন। এর পর চূড়ান্ত প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ তিন আসনে ভোট হবে আগামী ২৮ জুলাই। এ তিন উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বিএনএফ অংশ নিচ্ছে। বিএনপি অংশ না নেওয়ার ঘোষণা আগেই দিয়েছিল। তবে সিলেটে একজন বিএনপির নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ঢাকা-১৪ আসনে ছয় প্রার্থী : ঢাকা-১৪ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে মোট ছয়জন প্রার্থী গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আগা খান মিন্টু, জাতীয় পার্টির মোস্তাকুর রহমান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর অ্যাডভোকেট আবু হানিফ, বিএনএফ-এর এ ওয়াই এম কামরুল ইসলাম, স্বতন্ত্র হিসেবে মনিরুজ্জামান ও রুহুল আমীন সরকার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এ আসনে নির্বাচনে অংশ নিতে ১৭ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। এ বিষয়ে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মাহফুজা আক্তার বলেছেন, মোট ছয়জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে চারজন দলীয় ও দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এদের মধ্যে একজন অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেন বলে জানান সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ জালাল। এ নির্বাচনে মোট ১৭ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন।

কুমিল্লা-৫ আসনে দুই প্রার্থী : কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসানের কাছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম খান মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মো. জসিম উদ্দিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফৌজিয়া সিদ্দিকা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বুলবুল আহাম্মদের কাছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল হাসেম খান বলেন, শেখ হাসিনা সোনার বাংলা করে ফেলেছেন, আগামী দশ বছরের মধ্যে এ দেশ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় রূপান্তরিত হবে। এই উপনির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মূল্যায়ন করায় বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি নির্বাচিত হলে বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়াবাসীর উন্নয়নে কাজ করে যাব। কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন জানান, মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন পর্যন্ত দুই প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন নৌকা প্রতীক ও অন্যজন লাঙ্গল প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী।

সিলেট-৩ আসনে ছয় প্রার্থী : সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টিসহ মোট ছয়জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে তারা মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ নির্বাচনের বিষয়ে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের জানান, সিলেট-৩ আসনে ছয়জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ফাহমিদা হোসেন,  আলহাজ শফি আহমদ চৌধুরী, সেখ জাহিদুর রহমান মাসুম। জানা গেছে, বিএনপি উপনির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও সিলেট-৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমদ চৌধুরী। নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তিনি সরে দাঁড়াবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর আগে তিনি ওই আসন থেকে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত ২ জুন আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এই তিন উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। এর মধ্যে গত ১১ মার্চ সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে; ৪ এপ্রিল ঢাকা-১৪ এর আসলামুল হকের মৃত্যুতে এবং ১৪ এপ্রিল কুমিল্লা-৫ এর আবদুল মতিন খসরুর মৃত্যুতে তিনটি আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের চার দফায় বলা হয়েছে- সংসদের কোনো সদস্যপদ শূন্য হলে তার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশনারের মতে কোনো দৈব-দুর্বিপাকের কারণে এ নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব না হলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোট করতে হবে। সেই হিসাবে এসব আসনে প্রথম ৯০ দিনে ভোটগ্রহণ সম্ভব না হওয়ায়, দ্বিতীয় ৯০ দিনে ভোট হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর