দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, দুদককে কেউ সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। আবার দেশীয় গোয়েন্দা সংস্থা থেকে যে তথ্য পাওয়া যায় তাও অসম্পূর্ণ। তদন্তে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ের প্রয়োজনের কথাও বলেন তিনি।
গতকাল দুদক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স এগেনস্ট করাপশনের (র্যাক) সদস্যদের সঙ্গে পরিচিতি সভায় সংস্থাটির চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, অর্থ পাচারের বিষয়ে তারা সুনির্দিষ্ট তথ্য পাচ্ছেন না। কোথায় কত টাকা পাচার হচ্ছে সেই তথ্য আমাদের দিতে হবে। এসব তথ্য আমাদেরকে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। যেসব অভিযোগ আসে, তার ভিত্তিতে আমরা কাজ করি। মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে আমাদের কাছে সাধারণত তথ্য আসতে হয়। এ ব্যাপারে যেসব তথ্য থাকতে হয়, তা সাধারণত ডকুমেন্টরি হয়। তা সঠিকভাবে পেলে আমাদের মামলায় হারার কোনো সুযোগ নেই। এ কারণে এসব মামলায় আমরা সাফল্যও পাচ্ছি। কয়েক মাস আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি গেলেও তার উত্তর এখনো আসেনি। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, হাই কোর্ট আমাদের কাছে তালিকা চেয়েছে। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো তালিকা নেই। আমরা এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি তাদেরকে তাগিদও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সাড়া পাইনি। অর্থ পাচার রোধে তথ্য সংগ্রহে দুদকের নিজস্ব মেকানিজম নেই, সেটি অন্য সংস্থা থেকে পেতে হয়। সেটি চেয়েও পায় না দুদক। যা দেওয়া হয় সেটিও অসম্পূর্ণ। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করতে হয়।
এ সময় সেখানে উপস্থিত দুদকের নতুন কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, সীমাবদ্ধতা থাকলেও পাচারসহ সব দুর্নীতি বন্ধে আমরা তৎপর। দুর্নীতির সঙ্গে আমরা কোনো আপস করতে চাই না। দুর্নীতি করে যে পরিমাণ অর্থের অপচয় হয় বড় প্রকল্পগুলো সেই টাকা দিয়ে করা সম্ভব। কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক বলেন, আমরা বড় দুর্নীতি নিয়ে বসে আছি। টাকা দুর্নীতি হয়ে দেশের মধ্যে যদি থাকে সে টাকা দেশের যতটুকু ক্ষতি করে তারচেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি করে দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা পাচার হলে। দুদক কর্মকর্তারা বলেন, অর্থ পাচার হওয়া ১০টি দূতাবাসে ৫০টির বেশি চিঠি পাঠিয়েও পাওয়া যায়নি কোনো সদুত্তর। দেশীয় যেসব সংস্থা অর্থ পাচার রোধে তথ্য সংগ্রহের কাজটি করে তাদের দেওয়া তথ্য থাকে অসম্পূর্ণ। ফলে সমস্যার কূলকিনারা করা যায় না। তারা বলেন, অর্থ পাচার নিয়ে উদ্বিগ্ন দুদক, টাকা-পয়সা যেন বিদেশে না যায় সেটাই এখন একমাত্র লক্ষ্য দুদকের।