শনিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন

আবারও নৌকার প্রার্থী আইভী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আবারও নৌকার প্রার্থী আইভী

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে আবারও মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড ও দলের সংসদীয় বোর্ডের যৌথ সভায় এ মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়। একই সঙ্গে টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খান আহমেদ শুভকে। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য         নিশ্চিত করেন। বৈঠকে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ইউপি নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। আওয়ামী লীগ ও দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে মনোনয়ন বোর্ড সদস্য আমির হোসেন আমু, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওবায়দুল কাদের, কাজী জাফরউল্লাহ, কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান, রশিদুল আলম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান প্রমুখ অংশ নেন।  

আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সিটিতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৫ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ২০ ডিসেম্বর। আর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৭ ডিসেম্বর। একইভাবে টাঙ্গাইল-৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোটও ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠনের পর ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নির্বাচনে প্রথম নারী সিটি মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটির ভোটে নৌকা নিয়ে আইভী টানা দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হন। নারায়ণগঞ্জ থেকে আইভী ছাড়াও এই মেয়র পদের জন্য মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল ও মহানগরের সহসভাপতি চন্দন শীল দলের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন। গতকাল আওয়ামী লীগ আইভীকেই আবারও বেছে নিয়েছে।

এদিকে গত ১৬ নভেম্বর টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের চারবারের সংসদ সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. একাব্বর হোসেন মারা গেলে তার আসনটি শূন্য হয়। এ আসনে একাব্বর হোসেনের পরিবার থেকে দুজনসহ মোট সাতজন নৌকা প্রত্যাশী ছিলেন। এখানে উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুকের ছেলে, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য খান আহমেদ শুভকে। তিনি টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতিও। এদিকে আমাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে আইভীর মনোনয়ন প্রাপ্তির খবরে সেখানে আনন্দ মিছিল বের করেন আইভীপন্থি নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি শহরের ২ নম্বর রেলগেট আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহরের চাষাঢ়া এলাকা  প্রদক্ষিণ করে। মিছিলের  অগ্রভাগে নেতৃত্বে  ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল কাদির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, আনিসুর রহমান দীপু, আরজু ভূইয়াসহ নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে যারা মনোনয়ন পাননি তাদের প্রথম থেকেই ঘোষণা ছিল- আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যাকে নৌকা দেবেন তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন সবাই।

যা বললেন আইভী : আবারও নৌকার মনোনয়ন পাওয়া প্রসঙ্গে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘আল্লাহর দরবারে লাখো-কোটি শুকরিয়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য আমি আবারও দলীয় মনোনয়ন পেলাম। ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রী ও নমিনেশন বোর্ডে যারা ছিলেন তাদের সবাইকে। তারা নারায়ণগঞ্জবাসীর হৃদয়ের স্পন্দন বুঝতে পেরেছেন। নারায়ণগঞ্জবাসীকে অভিনন্দন, আমার উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে অব্যাহত সমর্থন দেওয়ার জন্য।’ গতকাল রাতে আইভীর মনোনয়ন পাওয়ার খবরে আনন্দ মিছিল করতে বের হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দেখতে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। 

অন্যরা যা বললেন : মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের জন্য মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীলের নামও তৃণমূল থেকে পাঠানো হয়েছিল। প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে চন্দন শীল বলেন, ‘দল যাকে অধিকতর যোগ্য মনে করেছে তাকেই মনোনয়ন দিয়েছে। দলীয় মনোনয়ন মাথা পেতে নিলাম।’ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, ‘এটা খুবই প্রত্যাশিত। অনাকাক্সিক্ষত কিছু ঘটেনি। মেয়র তার উন্নয়ন কর্মকান্ডের প্রতিদান পেয়েছেন।’ নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আইভীর দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তিকে স্বাগত জানাই। দল যাকেই দিত আমরা তার পক্ষেই কাজ করতাম। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিকেই বেছে নিয়েছে বলে মনে করি।’

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর