করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে হিমশিম পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু এর কোনো আঁচ লাগেনি রাজধানীর গুলিস্তানের কাপ্তানবাজারের কবুতর হাটে। কারও মুখে মাস্ক নেই। হাজারো মানুষ গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে কবুতরের হাটে দরকষাকষি করছে। একই পরিস্থিতি বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে। বিধিনিষেধ, জরুরি নির্দেশনা জারি হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানায় ভ্রুক্ষেপ নেই কারোর। ফলে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যাচ্ছে করোনা সংক্রমণ।
গতকাল কাপ্তানবাজার কবুতরের হাটে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে শুরু করে বহু দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতা-বিক্রেতা কবুতর নিয়ে এসেছেন হাটে। কেউ থুতনিতে মাস্ক লাগিয়ে ঘুরছেন, কারও হাতে, অনেকের মাস্কই নেই। ভিড়ে ধুলায় একাকার পরিস্থিতি। কবুতরের খোঁয়াড় ঘিরে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে মানুষ। এর মধ্যেই হাঁচি, কাশি, থুথু ফেলছে অনবরত। স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই কারও মাঝে। হাটে আসা কবুতর বিক্রেতা মাজেদ মিয়া বলেন, ‘সকাল ৮টায় এসেছি হাটে। এত ভিড়, গরমে মাস্ক পরে থাকা কষ্টকর। কেউই মাস্ক পরে না, আমি একা পরলে কি আর করোনা সংক্রমণ কমে যাবে।’ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) আয়োজিত বাণিজ্য মেলায় গিয়েও দেখা যায় স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ। গতকাল ছুটির দিনে মেলা প্রাঙ্গণ পরিণত হয়েছিল জনসমুদ্রে। এমনকি মেলার আশপাশের মহাসড়ক জুড়েও তৈরি হয়েছিল তীব্র যানজট। এবারই প্রথম ঢাকার বাইরে পূর্বাচল উপশহরের ৪ নম্বর সেক্টরে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর চলছে। শুরু থেকেই মেলায় ছুটির দিনগুলোতে বাড়তি চাপ দেখা গেছে। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার জন্য প্রবেশপথ ছাড়াও পণ্য প্রদর্শনীর জন্য স্টলে স্টলে রাখা হয়েছে মাস্ক, স্যানিটাইজার। নিরাপদ দূরত্ব রেখে, মাস্ক ব্যবহার করে মেলায় প্রবেশের জন্য মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছিল। কিন্তু মানছে না কেউ। মাস্ক নামিয়ে ঘোরাফেরা করছে অধিকাংশ মানুষ। বাণিজ্য মেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ছুটির দিনগুলোতে মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী আসছেন। গতকালও মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী এসেছেন। বেচাকেনাও হয়েছে বেশ। দর্শনার্থীর কেউ খালি হাতে যাচ্ছেন না, সবাই কিছু না কিছু কিনে নিয়েই যাচ্ছেন। সরেজমিন ঘুরে আরও দেখা গেছে, মেলায় পাশে থাকা এশিয়ান বাইপাস ও ৩০০ ফুট সড়কে কাজ চলমান থাকায় তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট।
কাঞ্চন সেতুর টোল এলাকায় সৃষ্ট যানজটে এশিয়ান বাইপাসের উলুখোলা পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। প্রতি ছুটির দিনই বিকাল ৫টা থেকে রাত পর্যন্ত এমন জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এসব বিষয়ে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের ট্রাফিক বিভাগের পূর্ব নির্ধারিত জনবলের পুলিশ সদস্য ছাড়াও মেলায় দায়িত্বরত সদস্যরা বিশেষ টিম হয়ে কাজ করছেন। এশিয়ান বাইপাস সড়কে নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় সরকারি ছুটির দিনে জটিল হচ্ছে যানজট পরিস্থিতি।