শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

দুর্নীতির মহোৎসবের যন্ত্র ইভিএম

-আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

দুর্নীতির মহোৎসবের যন্ত্র ইভিএম

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ভোট চুরি ও দুর্নীতির মহোৎসবের যন্ত্র হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। যেখানে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট নিশ্চিত করা যায় সেখানে প্রশ্নবিদ্ধ এই পদ্ধতিতে ভোট করার অর্থই হচ্ছে চুরি। দুর্নীতি করার জন্যই ৮ হাজার কোটি টাকায় ইভিএম কেনা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে দেশে ব্যালটের মাধ্যমেই জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।

আমীর খসরু বলেন, সব চুরি শেষে এখন ইভিএম কেনার নামে চুরি করছে। তিনি বলেন, দেশ অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত। ৪০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য সেখানে ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম কিনছে শুধু ভোট চুরির জন্য। ইভিএমের গ্রহণযোগ্যতা বাংলাদেশের কোনো মানুষের কাছে নেই। ইভিএম কেনার নামে যে দুর্নীতি হবে আগামীতে সংশ্লিষ্টদের নামে মামলা হবে। তিনি বলেন, অবৈধ এ সরকার বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। মানুষের জীবনযাত্রার মান কমে গেছে। সরকারি দলের লোকেরা বিদেশে টাকা পাচার করছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ইভিএম বাতিল করেছে। দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল এ প্রক্রিয়ায় ভোটের বিষয় নাকচ করে দিয়েছে। ইভিএম কেনা হলে জনগণ তা বঙ্গোপসাগরে ফেলবে। দেশের মানুষের টাকা জলে যাবে। তিনি বলেন, প্রযুক্তিগতভাবে ইভিএম একটি দুর্বল যন্ত্র। এতে ‘ভোটার ভেরিফায়েড পেপার অডিট ট্রেইল’ (ভিভিপিএটি) নেই, যার ফলে কমিশন ভোটের যে ফলাফল ঘোষণা করবে, তা-ই চূড়ান্ত হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এবং এটি পুনর্গণনা বা নিরীক্ষার সুযোগ থাকবে না। প্রযুক্তির কারণে ইভিএম ব্যবহার করে ডিজিটাল জালিয়াতিও করা যায়। বায়োমেট্রিকভিত্তিক ইভিএম অনেক ভোটারকেই শনাক্ত করতে পারে না, ফলে কমিশন প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের তাদের আঙুলের ছাপ দিয়ে যন্ত্রটি খুলে দেওয়ার তথা ইভিএমকে ওভাররাইড করার ক্ষমতা দিয়ে থাকে। যে-কোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মতো প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে ইভিএমের ফলাফল নিয়েও কারসাজি করা যায়। এ ছাড়া নির্বাচনের সময় মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত কারিগরি টিমও নির্বাচনী ফলাফল বদলে দিতে পারে। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও ভোটারদের আস্থাহীনতার কারণে পৃথিবীর অনেক দেশই এখন ইভিএম ব্যবহার থেকে সরে আসছে। প্রযুক্তির দিক থেকে অনেক উন্নত জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডসও ইভিএম ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। পৃথিবীর ১৭৮টির মধ্যে বর্তমানে শুধু ১৩টি দেশ তাদের সব নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করছে। মোট কথা, নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে দেশে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর