রাজধানীর বিজয় সরণি ওভার পাশ দিয়ে তেজগাঁও ট্রাফিক সিগন্যাল প্রান্ত। একটি লোহার স্ট্যান্ডে আটটি বাতি থাকার কথা, অথচ রয়েছে মাত্র দুটি। ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে দুটি বাতি। বাকি চারটির স্থান ফাঁকা। একই চিত্র নগরীর ব্যস্ততম সড়ক মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল ও গুলিস্তানের।
রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় হাতের ইশারা, রশি ধরে ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণে ডিজিটাল যন্ত্রপাতি কেনার কিংবা বাস্তবায়নে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের চোখে পড়ার মতো কোনো উদ্যোগ নেই। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মতিঝিল, গুলিস্তান, পল্টন, শাহবাগ, কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ, মগবাজার, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, নিউ মার্কেট, চকবাজারসহ পুলিশ প্লাজা থেকে গুলশান ১ নম্বর, মহাখালী ও কল্যাণপুরের ট্রাফিক সিগন্যাল লাইটগুলোর বেহাল দশা। দুই সিটির আওতাধীন অধিকাংশ ট্রাফিক সিগন্যাল লাইট অকার্যকর হয়ে পড়ে আছে। কোথাও কোথাও লাইট ভেঙে পড়ে আছে, আবার কোথাও শুধু স্ট্যান্ড আছে, লাইট নেই। শুধু গুলশান-২ নম্বর চত্বরে সিগন্যাল লাইট কার্যকর দেখা গেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক উত্তরের যুগ্ম কমিশনার আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ জানান, গুলশান-২ এর ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়া আর কোথাও ডিজিটাল সিগন্যাল নেই। ট্রাফিক সিগন্যাল করার কাজ সিটি করপোরেশনের। ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যালের জন্য লজিস্টিক সাপোর্ট দেবে সিটি করপোরেশন, আর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় থাকবে পুলিশ। তেজগাঁও এলাকায় দেখা যায়, পুলিশ হাত তুললেও যানবাহন থামছে না। কখনো কখনো এমনও দেখা যায়, পুলিশকে দুই হাত ছড়িয়ে চলন্ত গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়তে, তাতে যদি অন্তত থামে তারা। নতুন কৌশল হিসেবে তেজগাঁও এবং কারওয়ানবাজার মোড়ে রশি বেঁধে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বিজয় সরণিসহ অনেক মোড়েই দেখা যায় রশি টানানোর কৌশল। এসব এলাকায় দেখা যায়, যানবাহন আটকাতে হলে পুলিশ রশি টানটান করে দিচ্ছে, আবার যখন ছাড়তে হবে তখন ঢিলে করে দেওয়া হচ্ছে। কারওয়ানবাজারের সিগন্যাল পয়েন্টে দেখা যায়, এখানে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। গাড়িচালকরা অপেক্ষায় থাকেন ট্রাফিক সদস্যদের হাত উঁচিয়ে সংকেত দেওয়ার দিকে। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা বলছেন, স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি গাড়ি চলাচল করে রাজধানীর রাস্তাঘাটে। অন্যদিকে মানুষের মধ্যে সিগন্যাল দেখে চলা বা আইন মানার প্রবণতা নেই। তাই বাধ্য হয়েই হাতের ইশারায় সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে।