বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে চুক্তির জন্য তিন মাস সময় পেল বিএফআইইউ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স বা এমএলএ চুক্তির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) তিন মাস সময় দিয়েছেন হাই কোর্ট।

গতকাল এ বিষয়ে বিএফআইইউর একটি প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। পরে আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, অর্থ পাচার ও ফেরানোর বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে আমরা তিন মাস সময় চেয়েছিলাম। আদালত সময় দিয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। আদালত এ বিষয়ে সরকার টু সরকার চুক্তির বিষয়ে বলেছেন।

এটা বিএফআইইউর প্রতিবেদনে ছিল না। দুদকের তৎপরতা নিয়ে আদালত উষ্মা প্রকাশ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আদালত বলেছেন, অর্থ পাচার ও ফেরত আনার বিষয়ে দুদক ঘুমিয়ে আছে। এতদিন কাজ হয়নি।’

পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে ১০ দেশের সঙ্গে চুক্তি করার ইচ্ছা পোষণ করে গত মঙ্গলবার হাই কোর্টে হলফনামা আকারে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেন বিএফআইইউর প্রধান ইউনিটের প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস। এই দেশগুলো হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, হংকং-চায়না। অর্থ ফেরাতে কোন কোন দেশের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে- তা জানাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিএফআইইউকে অনুরোধ করেছিল। পরে বিএফআইইউ এসব দেশের সঙ্গে চুক্তির যৌক্তিকতা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানায়। এর মধ্য দিয়ে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে এই দেশগুলোতে অর্থ পাচার হতে পারে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্পর্কিত মামলার তথ্য-প্রমাণ বিদেশি রাষ্ট্র থেকে যথাসময়ে না পাওয়ার প্রেক্ষাপটে এই অনুরোধ এসেছিল বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়। সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের তথ্য চাওয়া হয়নি বলে গত ১০ আগস্ট ঢাকায় সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন হাই কোর্ট। এরপর ১৪ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে আদালত বলেছিলেন, রাষ্ট্রদূতের ওই বক্তব্য ‘বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে’। এরপর পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে বিএফআইইউকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। বিএফআইইউর প্রতিবেদনেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কোনো চিত্র আসেনি।

সর্বশেষ খবর