আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে হলে আবারও জেলে যেতে হবে। আদালতের অনুমতি নিতে হবে। এখানে আদালতের কাজের ওপর আমাদের হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।
গতকাল ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান শতরূপা বড়ুয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওয়াশিংটন সফরের সময় ওই সাক্ষাৎকার নেন। এ সাক্ষাৎকারের ভিডিও ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ওয়াশিংটন থেকে লন্ডন পৌঁছেছেন। সেখানে দুই দিন অবস্থান করে দেশে ফিরবেন তিনি। বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কেন তাদের এই স্যাংশন জানি না। ভিসা নিষেধাজ্ঞার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তারা আরও নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে- এটা তাদের ইচ্ছা। সম্প্রতি সংসদে পাস হওয়া সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাজা কমানো হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নিরপেক্ষ সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলাম তখন বিএনপি নেত্রী বলেছিলেন, একমাত্র পাগল ও শিশু ছাড়া নিরপেক্ষ কেউ নেই। এ পদ্ধতি তারা নষ্ট করেছে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত সরকার আরেকটি নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। কাজেই আমরা কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার করতে যাব? সে সুযোগ নেই। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ছয় বছর হয়ে গেল। আমরা মিয়ানমারকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। তাদের নাগরিক তারা ফেরত নিয়ে যাক।
আসন্ন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি তাদের বলব যে, বাংলাদেশের সম্মানটা যেন বজায় থাকে। তারা সেভাবে সবটুকু ঢেলে দেবে এবং আন্তরিকতার সঙ্গে খেলবে- সেটাই আমি চাই। বাংলাদেশে গুমের ঘটনা নিয়েও প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী।ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারটি হুবহু তুলে ধরা হলো : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতির খবর আমরা পাচ্ছি। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি আপনারা কি পুনর্বিবেচনা করবেন? জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জিজ্ঞেস করি, পৃথিবীর কোন দেশ সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পেরেছে? পৃথিবীর কোনো দেশ দেবে? তাদের যদি চাইতে হয় তাহলে আবার আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এখানে আদালতের কাজের ওপর আমাদের হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, ‘তবে হ্যাঁ, যেটুকু করতে পেরেছি তার জন্য সেটা হচ্ছে যে, আমার যেটুকু সরকার হিসেবে ক্ষমতা আছে তার সাজাটা স্থগিত করে তাকে বাড়িতে থাকার পারমিশন দেওয়া হয়েছে এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা; সে নিজেই চিকিৎসা নিচ্ছে এখন। বাংলাদেশের সব থেকে দামি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আর যদি তাদের যেতে হয় বাইরে, এখন যে আমি বাসায় থাকার পারমিশনটা দিয়েছি এটা আমাকে উইথড্রো করতে হবে। তাকে আবার জেলে যেতে হবে এবং কোর্টে যেতে হবে। কোর্টের কাছে আবেদন করতে হবে। কোর্ট যদি রায় দেয়, তখন সে যেতে পারবে। এটা হলো বাস্তবতা।’
সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং র?্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞাসহ মানবাধিকার ও ভোট-সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করেন শতরূপা বড়ুয়া। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার এটাই প্রশ্ন যে, হঠাৎ কথা নেই বার্তা নেই তারা আমাদের ওপর ভিসা স্যাংশন দিতে চাচ্ছে কী কারণে? আর মানবাধিকার বা ভোটের অধিকারের কথা যদি বলে, তাহলে আমরা আওয়ামী লীগ, আমরাই তো বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করেছি। আমাদের কত মানুষ রক্ত দিয়েছে এই ভোটের অধিকার আদায় করার জন্য। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয়, তার জন্য যত রকমের সংস্কার, সেটা আমরাই তো করেছি। আজকে ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, মানুষকে ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা।’ তিনি বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’- স্লোগান তো আমার দেওয়া। আমি এভাবে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছি। আমাদের দেশে বেশির ভাগ সময় মিলিটারি ডিক্টেটর (সামরিক স্বৈরাচার) দেশ শাসন করেছে। তখন তো মানুষের ভোট দেওয়া লাগেনি। তারা ভোটের বাক্স নিয়ে গিয়ে শুধু রেজাল্ট ঘোষণা দিয়েছে। এরই প্রতিবাদে আমরা আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম করে নির্বাচন সুষ্ঠু পরিবেশে নিয়ে আসতে পেরেছি। এখন মানুষ তার ভোটের অধিকার সম্পর্কে অনেক সচেতন। সেটা আমরা করেছি। কাজেই সেই ক্ষেত্রে হঠাৎ এ ধরনের কোনো স্যাংশন দেওয়ার যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না।
র?্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী আমাদের দেশের কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, সেটা র?্যাব হোক, পুলিশ বা যেটাই হোক- কেউ যদি কোনো রকম অন্যায় করে, তাদের কিন্তু বিচার হয়। এই বিচারে কেউ রেহাই পায় না। অনেক সময় কোনো কাজ তারা অতিরিক্ত করে, করতে পারে। কিন্তু করলে আমাদের দেশের আইনেই সেটার বিচার হচ্ছে। যেখানে এমন বিচার হচ্ছে, এ ধরনের ব্যবস্থা আছে, সেখানে এই স্যাংশন কী কারণে?’ ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচন- প্রতিটি সুষ্ঠুভাবে হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এসব নির্বাচনে মানুষ তার ভোট দিয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। এ নির্বাচনগুলো নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছে, কিন্তু বাস্তবতাটা কী, বাংলাদেশের মানুষ তার ভোটের অধিকার নিয়ে সবসময় সচেতন। কেউ ভোট চুরি করলে তাদের ক্ষমতায় থাকতে দেয় না। প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিলেন। তিনি কিন্তু দেড় মাসও টিকতে পারেননি। ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ জনগণের রুদ্ররোষে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন তিনি। আবার ২০০৬ সালে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি করেছিল। সেই ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচন করে তিনি যখন সরকার গঠনের ঘোষণা দিলেন... এরপর ইমার্জেন্সি (জরুরি অবস্থা) জারি করা হলো। সেই নির্বাচন বাতিল হয়ে গেল। কাজেই আমাদের দেশের মানুষ কিন্তু এখন ভোট সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। কাজেই একটা নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এটা তো আমাদেরই দাবি ছিল। আন্দোলন করে আমরাই সেটা প্রতিষ্ঠিত করেছি। তো আজ এখন তারা স্যাংশন দিচ্ছে, আরও দেবে, দিতে পারে। এটা তাদের ইচ্ছা। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের যে অধিকার; তাদের ভোটের অধিকার, তাদের ভাতের অধিকার, তাদের বেঁচে থাকার অধিকার, তাদের শিক্ষাদীক্ষার অধিকারসহ সকল মৌলিক অধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি।’ ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল, বাংলাদেশকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ বলে অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথা, ‘এখন আর বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ নেই, এখন মানুষের সেরকম হাহাকার নেই, এমনকি আমাদের যে বেকারত্ব, সেটাও কিন্তু কমে এখন মাত্র ৩ শতাংশ। সেটাও তারা ইচ্ছা করলে কাজ করে খেতে পারে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ, ওয়াইফাই কানেকশন সারা দেশে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাটের অভূতপূর্ব উন্নয়ন আমরা করে দিয়েছি; মানুষ যেন কাজ করে খেতে পারে। আমাদের বিশেষ করে কারিগরি শিক্ষা, ভোকেশনাল ট্রেনিং; আমরা এগুলোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। এভাবে দেশের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সেখানে এভাবে স্যাংশন দিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেওয়া...। তো ঠিক আছে, স্যাংশন দিলে (বাংলাদেশিরা) আমেরিকা আসতে পারবে না, আসবে না। না আসলে কী আসবে-যাবে? আমাদের দেশে এখন যথেষ্ট কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। কাজেই আমরা দেখি, কী করে তারা। কেন তাদের এই স্যাংশন জারি।
বাংলাদেশে গুম নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এরকম অভিযোগ অনেকেই দেয়। কিন্তু তার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। কোনো নাম দিতে পারে না, কোনো কিছুই দিতে পারে না। অনেক সময় দেখা যায়, বলা হচ্ছে অমুক লোক নেই। কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। সে ঠিকই জীবিত আছে। আবার কেউ অনেক সময় নিজেরাই পালায়। অনেক সময় ধারকর্জ করে নিজেরাই লুকিয়ে পড়ে; সে ধরনের ঘটনাও আছে। প্রত্যেকটা কিন্তু খোঁজ করে বের করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যেখানে এতগুলো নাম দেওয়া হলো, তার মধ্যে কয়েকটা ঘটনাই পাওয়া গেছে সত্য। সেগুলোর সম্পর্কে ঠিকই রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। আর রিপোর্ট দেওয়া হলো না কেন নিজেরা তারা তদন্ত করে দেখুক। নিজেরা তদন্ত করে না কেন, সেটাই তো আমার প্রশ্ন। সেটা করুক। ‘যারা হত্যাকারী, খুনি বা বোমা হামলাকারী, গ্রেনেড হামলাকারী অগ্নিসন্ত্রাসী কই তাদের ব্যাপারে তো কোনো কথা নেই! যখন এই বাংলাদেশে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারত, সে সময় তো এই মানবাধিকার সংস্থাগুলো তেমন কোনো সোচ্চার হয়নি! ৩ হাজার ২২৫ জন মানুষকে পোড়ানো হয়েছে। ৫০০ এর মতো মানুষ শুধু পুড়েই মারা গেছে। ৩ হাজার ৮০০ ওপরে গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। তখন এই মানবাধিকারের চেতনাটা ছিল কোথায়? সেটা আমার প্রশ্ন’, বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘যখনই মানুষ খেয়েপড়ে একটু ভালো থাকবে, তখনই এ ধরনের প্রশ্ন উঠবে; তো কাদের মানবাধিকার? যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীর মানবাধিকার নিয়েই তারা চিন্তিত। আমরা যারা আমাদের আপনজন হারিয়েছি, আমাদের মানবাধিকার নেই বা আমার মতো যারা আপনজন হারিয়েছে তাদের মানবাধিকার নেই? সে ব্যাপারে কথা নেই। অদ্ভুত একেকটা রিপোর্ট তৈরি করে দিলেই তো হলো না! সত্যতা যাচাই করে নিক তারা, বের করুক।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ যেটা দিচ্ছে, ঠিক মতোনই দিচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যেটুকু রিপ্লাই দেওয়ার, আমরা দিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু অহেতুক মিথ্যা অপবাদ দেওয়াটা, এটা কখনো গ্রহণযোগ্য না।’ বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকার অহেতুক কোনো মামলা দেয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যে ধরনের অপকর্ম করছে সে তুলনায় তাদের বিরুদ্ধে কিছুই করা হয়নি।
সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, বিএনপির ‘মামলা ও তথ্য সংরক্ষণ’ সেল থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে গত ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ১৪ বছরে সারা দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬৩৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ৪৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৯২ জন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলো নতুন করে করা না। তাদের বিরুদ্ধে মামলা কেন হয়েছিল? তাদের দুর্নীতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, অগ্নিসন্ত্রাস; সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে অগ্নিসন্ত্রাসের। মামলা একটি চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। অনেক বছর ধরে একেকটা মামলা চলছে। চলতে চলতে এ পর্যন্ত এসেছে। তারা যে মামলার হিসাব দিল তার কি কোনো তালিকা দিতে পেরেছে?
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বিরুদ্ধেই তো এক ডজনের বেশি মামলা দিয়েছিল খালেদা জিয়া। কই, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আমরা তো কোনো মামলা দিইনি। সব মামলা তারই নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট, সেনাপ্রধান এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেওয়া। সেগুলোর একেক করে রায় হয়েছে এবং সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে খালেদা জিয়া। বিএনপির অন্য নেতাদের বিরুদ্ধেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের মামলা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর বাইরে তাদের অগ্নিসন্ত্রাস, তাদের দুর্নীতি, মানুষ হত্যাসহ নানা ধরনের অপকর্মের মামলা রয়েছে। সেগুলোই নিষ্পত্তি হচ্ছে। তাড়াতাড়ি করা হচ্ছে না।
বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যার অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেরই লাশ গুম করা হয়েছ। স্বজনরা তাদের লাশ দেখতেও পারেনি। আমি নিজেও তো পারিনি আমার বাবা-মায়ের লাশ দেখতে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো এখনো চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীরা যে ধরনের অপকর্ম করেছে সে তুলনায় তাদের বিরুদ্ধে তো কিছুই করা হয়নি। ২০০১ সালে অপারেশন ক্লিনহার্টের মাধ্যমে যেসব মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, দায়ীদের কারও বিচার হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেই হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়েছে বিএনপি সরকার। ১৫ আগস্ট আমার পরিবারকে যারা হত্যা করেছে সেই খুনিদের ইনডেমনিটি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে জিয়াউর রহমান, এরপর খালেদা জিয়া। খুনিদের মদদ দেওয়া তাদেরই কাজ। আওয়ামী লীগ অহেতুক কারও বিরুদ্ধে মামলা করে না। অপরাধ যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। অপরাধীর বিরুদ্ধ মামলা হবে, সাজা হবে এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার। এখানে বিএনপি বলে কিছু নেই, অপরাধী তো অপরাধীই। অপরাধী হিসেবেই তাদের দেখতে হবে।’
পুরনো মামলা নতুন করে সচল করা হচ্ছে, এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মনে করেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মামলার আবার নতুন-পুরান কী আছে? বিভিন্ন অপরাধ করেছে, বিভিন্ন মামলা হয়েছে। যদি নতুন করে কেউ অপরাধ করে তাহলে নতুন করে মামলা হবে। জনগণের সম্পদ রক্ষা করা তো সরকারের দায়িত্ব। তিনি বলেন, এরা তো অপরাধ করছে। মানুষ খুন করা, গাড়ি পোড়ানো, পুলিশ হত্যা করা- নানা ধরনের অপকর্ম তো তারা করেছে। তাদের মিছিল করতে দেওয়া হয়, কিন্তু এখনো তারা পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়, দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন দেয়। যখন পুলিশ পদক্ষেপ নেয় তখন ছবি তুলে বলে, পুলিশ আমাদের মারছে। বাংলাদেশের আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদালতে মামলার বিষয়ে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করে না। এখন যদি কেউ ট্রাকে আগুন দেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে না, তবে কি ফুলের মালা দিয়ে তাকে বরণ করা হবে? তারা একের পর এক অপরাধ করবে আর এদিকে কেঁদে ফেলবে, সেটা তো হয় না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার পথ নেই জানিয়ে সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার এখন জনগণের হাতে। জনগণ যাকে ভোট দেবে, তারাই সরকার গঠন করবে। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই তত্ত্বাবধায়কের জন্য বিএনপি যখন ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করে তখনই আমরা আন্দোলন করেছিলাম। ভোট চুরি যখন করে, তখন। তখনই কিন্তু পাবলিক ওটা চাচ্ছিল। তখন বিএনপির নেত্রী বলেছিল, পাগল এবং শিশু ছাড়া কেউ নাকি নিরপেক্ষ নাই। এটা তাদেরই কথা। তারাই এর বিরুদ্ধে ছিল। দ্বিতীয় কথা হলো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তো নির্বাচন হয়েছিল ২০০৮ সালে। কারণ বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬-এ জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, দুর্নীতি, তাদের স্বজনপ্রীতি, মানি লন্ডারিং; যত রকম অপকর্ম এসব কারণে বাংলাদেশে ইমারজেন্সি ডিক্লিয়ার হয়। তখন কিন্তু এই কেয়ারটেকার সরকার আসে। দুই বছর কিন্তু তারা ইলেকশন দেয়নি। বরং আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা-টামলা দিয়ে হয়রানিও করে। তার পরে যখন ২০০৮-এ নির্বাচন হলো, সেই নির্বাচনটাও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হয়। সেই নির্বাচনে বিএনপি কয়টা সিট পেয়েছিল? ৩০০ সিট আমাদের। বিএনপির নেতৃত্বে জামায়াতসহ ২০-দলীয় ঐক্যজোট সিট পেয়েছিল মাত্র ২৯টি। আর পরে রিইলেকশনে একটাসহ ৩০টি। কাজেই তাদের অবস্থানটা ওই জায়গায়। ওই কেয়ারটেকারের অধীনে নির্বাচনেই তাদের এই অবস্থানটা।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, যার জন্য তারা ২০১৪-এর নির্বাচন বয়কট করে এবং সেটা বানচাল করার জন্য অগ্নিসন্ত্রাস করে। তখন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে। আমি আগেই বলেছি, ৩ হাজারের ওপরে মানুষকে তারা পুড়িয়েছিল। হাজার হাজার গাছ তারা কেটে ফেলে। রাস্তা কেটে ফেলে। এভাবে তারা তাণ্ডব করেছিল। ৫০০-এর মতো ভোট কেন্দ্র পুড়িয়েছিল, স্কুল পুড়িয়েছিল। এজলাসে বসা জজ সাহেবের ওপর বোমা মেরে হত্যা করে। আইনজীবী হত্যা করে। এটা ধ্বংসযজ্ঞ তারা চালাচ্ছিল। তারা নির্বাচন বয়কট করেছিল। এর পরে এলো ২০১৮-এর নির্বাচন। তখন তারা অংশগ্রহণ করল। সেখানে ৩০০ সিটে প্রায় সাড়ে সাত শ নমিনেশন! কারণ লন্ডন থেকে একটা নমিনেশন আসে, তাদের গুলশান অফিস থেকে একটা যায় আর পুরানা পল্টন অফিস থেকে একটা যায়। এভাবে যখন একেক সিটের পেছনে দুজন-তিনজন করে নমিনেশন দিয়ে নিজেরা নিজেরা গন্ডগোল করে একটা পর্যায়ে তারা নির্বাচন থেকে সরে যায়। সেই নির্বাচনেও তারা ফেইল করে। যে কজন ইলেকশন করেছিল, তার মধ্যে তারা জিতেছিল কয়েকজন, বলেন তিনি।
বিএনপি কখনো সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করেনি মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘তারা সুষ্ঠুভাবে ইলেকশন করতে চায় না। এবার হঠাৎ তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি কেন? প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের নেতাটা কে? মানুষ ভোট দেবে কাকে? মানুষ একজন নেতৃত্ব দেখতে চায় যে, তাকে ভোট দিলে ভবিষ্যতে সে এ দেশ চালাবে। বিএনপি কি তেমন কাউকে সামনে আনতে পেরেছে, যাকে নিয়ে তারা ইলেকশন করবে?’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের ২০-দলীয় জোট আছে এই পর্যন্ত। কিন্তু নেতৃত্ব কোথায়! যে সামনে দেশ পরিচালনা করবে। তৃতীয় কথা হচ্ছে, ইলেকশন; এটা তো জনগণের ভোটের অধিকার। যখন ২০০৭ সালে ইমারজেন্সি ঘোষণা হলো, এর পরে উচ্চ আদালতের রায় ছিল যে, বাংলাদেশে আর কেউ বা অনির্বাচিত সরকার বাংলাদেশে আসতে পারবে না। একটা নির্বাচিত সরকারের পরিবর্তে আরেকটি নির্বাচিত সরকারই আসতে হবে। জিয়াউর রহমান যে ক্ষমতা দখল করেছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেই ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর জেনারেল এরশাদ এভাবে মার্শাল ল দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। সেই ক্ষমতাকেও অবৈধ ঘোষণা করা হয়। ওই রায়েই বলা হয়, আর কখনো অনির্বাচিত কেউ সরকারে আসতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত থেকেই কিন্তু এটা ঘোষণা করা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধান সংশোধন করে এ রায়কে কার্যকর করা হয়। এখন আবার সেই উচ্চ আদালতের রায় আমরা কীভাবে ফেরত দেব বা কীভাবে আবার সংবিধান সংশোধন করব? আর কেনই বা আমরা করব? কারণ আমাদের তো তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে।’ তিনি বলেন, ‘এ রকম একেকবার একেকটা ঘটনা ঘটতে ঘটতে আজকে বাংলাদেশ, যেহেতু ২০০৮ এর নির্বাচনের পর ২০০৯-এ সরকার গঠন করে আজকে ২০২৩ পর্যন্ত একটা স্থিতিশীল অবস্থা; যেটাকে অস্থিতিশীল করার জন্য অনেক রকমের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, সংঘাত, অগ্নিসংযোগ অনেক কিছুই করা হয়েছে। সেগুলো সব মোকাবিলা করে বাংলাদেশ যখন আর্থসামাজিকভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে গেছে এবং বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, সেটা কার্যকর করা একান্তভাবে অপরিহার্য। সেখানে আমাদের নির্বাচিত সরকারই তো দরকার। মাঝখানে আমি অনির্বাচিত সরকার কোথা থেকে আনব?’ তিনি বলেন, ‘একসময় তারা এটার প্রতিবাদ করত, এখন তারা দাবি করে, আবার আগামীতে কী করবে, এর তো কোনো ঠিকঠিকানা নাই! তা ছাড়া, এই পদ্ধতিটা তো বিএনপি নষ্ট করেছে। তারা তাদের মনমতো সরকার বসানোর জন্য উচ্চ আদালতের জজের বয়স বাড়ানো, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা করা, নানা ধরনের অপকর্ম তারা করেছিল। কোনোটা কাজে লাগেনি। কারণ জনগণ এটা মেনে নয়নি। জনগণের ভোটের অধিকার এখন জনগণের হাতে। জনগণ যাকে ভোট দেবে, তারাই সরকার গঠন করবে। কাজেই এখন আর সেখানে ফিরে যাওয়ার তো পথ নেই! এখন আমাদের সংবিধানেও সুরক্ষিত করা আছে জনগণের ভোটের অধিকার; নির্বাচিত সরকারের পরিবর্তে নির্বাচিত সরকারই আসবে।’
‘বাংলাদেশের সম্মানটা যেন বজায় থাকে’, সাকিবদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী : সপ্তমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলবে বাংলাদেশ দল। বিশ্বকাপে অংশ নিতে এর মধ্যে তারা ভারতে গেছে। বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দলের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আশা করছেন, খেলোয়াড়রা নিজেদের নিংড়ে দেশের সম্মান বজায় রাখবেন। যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ক্রিকেট দলের প্রতি বার্তা দেন, ‘আমি তাদের বলব যে বাংলাদেশের সম্মানটা যেন বজায় থাকে। তারা সেভাবে সবটুকু ঢেলে দেবে এবং আন্তরিকতার সঙ্গে খেলবে- সেটাই আমি চাই।’ তিনি, ‘আমার সঙ্গে সব সময় তাদের যোগাযোগ থাকে। আসার আগেও আমি কথা বললাম। খেলোয়াড়দের সঙ্গেও আমি কথা বলি। যারা সংগঠক তাদের সঙ্গেও কথা বলি। আমি সব সময় খেয়াল রাখি। সব রকম সহযোগিতা করে থাকি।’ ফলাফল কী হবে না ভেবে নিজেদের সেরাটা দিতে পারবে বাংলাদেশ দল, আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপে আমরা যে সুযোগ পেয়েছি, এটা সবচাইতে ভালো দিক। ভালোভাবে খেলতে পারলে ভালো রেজাল্ট করতেও পারবে। আমি আশাবাদী সব সময়।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে হতাশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানবিক কারণেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং তাদের প্রতি সব রকম দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। কিন্তু সময় এবং সাধ্যের বাইরে চলে যাওয়ার কারণে এখন রোহিঙ্গাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়া উচিত। তাঁর প্রশ্ন, দেখতে দেখতে তো ছয় বছর হয়ে গেল, আর কত? তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা বসবাস করছে ক্যাম্পে। রোহিঙ্গা শিশুরা সেখানেই জন্ম নিচ্ছে, বড় হচ্ছে। অনেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এভাবে শিশুরা ক্যাম্পে জীবনধারণ করে সুস্থভাবে বড় হতে পারছে না বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিকভাবে সবাইকে বলেছি যে অন্তত একটি ব্যবস্থা নিন যেন তারা নিজের দেশে ফিরে যেতে পারে। জাতিসংঘ কিংবা অন্যান্য এনজিও যারা এখন সহযোগিতা করছে তারা তো সেটা ওখানেও দিতে পারে। আমাদের যেহেতু প্রতিবেশী, তাদের সঙ্গে একটা আলোচনা করে যাচ্ছি। তাদের আমরা বোঝানোর চেষ্টা করছি যে আপনাদের নাগরিক আপনারা ফেরত নিয়ে যান। এ পর্যন্ত চলছে তো চলছেই। কিন্তু আর কত? প্রায় ছয় বছর হয়ে গেল। এভাবে তো জীবনে সুস্থতা থাকে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আমাদের সাধ্যমতো। আন্তর্জাতিক সাহায্য কমে যাচ্ছে, যেটা আরও বেশি দুর্ভাগ্যের বিষয়। তবু যেহেতু আমরা আশ্রয় দিয়েছি আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করে যাচ্ছি। কিন্তু আমি চাই এটা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মিলে একটু চেষ্টা করুক যেন রোহিঙ্গারা নিজের দেশে ফিরতে পারে, ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে, মানুষের মতো জীবনযাপন করতে পারে সেটাই আমরা চাই।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো যে কভিড-১৯ বা রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছিল, সেটা অনেকটাই কমে গেছে। এখন এ বোঝাটা পড়ে যাচ্ছে একা আমাদের ওপর।’ রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় নিরাপত্তা সংকট নিরসনে কেমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। প্রত্যেকটি বাহিনী সেখানে সক্রিয় থেকে কাজ করছে। তার পরও তো বিশাল ক্যাম্প, কখন কোথায় কী ঘটনা ঘটে যায় তা নজরদারিতে আনা কষ্ট। সেখানে ১১ লাখ মানুষ আছে সেটা মাথায় রাখতে হবে।’