সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, যাদের ৫০০ গুণ সম্পদ বেড়েছে, তারা কি ৫০০ গুণ কর দেন? এটা তো এখন দেখার বিষয়। আইএমএফের শর্ত পূরণে এনবিআরের জন্য এর চেয়ে বড় উৎস আর তো কিছু হতে পারে না। আমরা দেখতে চাই এনবিআর তাদের জন্য কী করে।
গতকাল রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম আয়োজিত ব্রিফিংয়ে হলফনামায় যে হারে প্রার্থীদের সম্পদ বাড়ার তথ্য এসেছে সেই অনুযায়ী প্রার্থীরা কর দেন কি না এমন প্রশ্ন রেখে ড. দেবপ্রিয় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য এবং ‘নীরব জনগোষ্ঠী’র কণ্ঠকে শক্তিশালী করার বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, উন্নয়ন কর্মী ও জেন্ডার বিশ্লেষক এম বি আখতার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ মোহাম্মদ শাহান। এতে সভাপতিত্ব করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। মিডিয়া ব্রিফিংয়ের তাৎপর্য উপস্থাপন করেন সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। ড. দেবপ্রিয় বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের অনেকের সম্পদ গত ৫ থেকে ১০ বছরে বেড়েছে কয়েক শ গুণ। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া প্রার্থীদের হলফনামায় এমন তথ্য উঠে এলেও তারা সে অনুযায়ী আয়কর দেন কি না এমন প্রশ্ন অনেকের। এ অবস্থায় কর আদায় বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রার্থীদের হলফনামা দেখে আয়কর আদায় করতে পারে বলে জানান তিনি। প্রার্থীরা কর ফাঁকি দিতে মুরগির খামারি হয়ে গেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই মুরগির খামারি হয়ে গেছেন। সবাই মাছ চাষি হয়ে গেছেন। কারণ একটায়, কর সেই অর্থে দিতে হয় না। কর রেয়াত ছিল, ওইখান থেকে আয়-ব্যয় বেড়ে গেছে। এটা আগামী দিনে এনবিআরের কাছে চ্যালেঞ্জ। তাদের তো একটা প্রতিশ্রুতি (কর আদায়) দেওয়া আছে, সেটা পূরণ করার সব উৎস হিসেবেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি যে জটিল থেকে জটিলতর অবস্থানে যাচ্ছে, যেখানে কেবল নিজের টাকা না, বিদেশের টাকা শোধ করতে পারছি না দেখে জ্বালানি নিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মূল্যস্ফীতি আগামী দিনে কী দাঁড়াবে আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। সেখানে কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র সেটা কীভাবে মোকাবিলা করবে, সেই উৎকণ্ঠা আমাদের সবার মধ্যে আছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সমান প্রতিযোগিতা ক্ষেত্র তৈরি করা ও তার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন যে হচ্ছে তা নয়। তবুও ক্ষমতা নির্ধারিত হবে ও তা পাকাপোক্ত হবে। তিনি আরও বলেন, এতে স্টেকহোল্ডারসহ অনেকেই নাখোশ হবেন। কিছু কিছু প্রতিবাদ করবেন কয়েকদিন। তারপর সব ঠিক হয়ে যাবে। ন্যায্যতার পথে যাত্রা আরও দীর্ঘ হবে।