বুধবার, ৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট পুতিনের শপথ

প্রতিদিন ডেস্ক

পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট পুতিনের শপথ

পশ্চিমা নেতাদের বয়কটের মধ্যেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। গতকাল দুপুরে মস্কোর গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্যালেসের সুসজ্জিত সেইন্ট অ্যান্ড্রু হলে পঞ্চমবারের মতো শপথ নেন তিনি। গত মার্চে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৮৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হলেন ৭১ বছর বয়সী এ নেতা। শপথ গ্রহণের পর প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ। সম্মিলিতভাবে সব বাধা অতিক্রম করব, আমাদের সব পরিকল্পনা সফল করব এবং জয়ী হব।’ খবর আলজাজিরার। শপথ অনুষ্ঠানে দূত পাঠাবে না বলে আগেই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশির ভাগ দেশ। মস্কোতে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে লেভিক উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান ঘিরে ব্যাপক তিক্ততা চলছে প্যারিস এবং মস্কোর মধ্যে। তবে পোল্যান্ড, জার্মানি এবং চেক রিপাবলিকের রাষ্ট্রদূতদের অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। তিন দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর ‘অন্যায়’ অভিযানের প্রতিবাদ হিসেবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নিজ নিজ রাষ্ট্রদূতদের না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, রাশিয়ার নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু বিবেচনা করেনি যুক্তরাষ্ট্র। তাই পুতিনের শপথ অনুষ্ঠানে কেউ যাবে না। যুক্তরাজ্য ও কানাডা জানিয়েছে, তারা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য কাউকে পাঠাবে না। জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারাও এতে অংশ নেবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র বলেছেন, ২০টি ইইউ সদস্য রাষ্ট্র এ অনুষ্ঠান বয়কট করবে। তবে ফ্রান্স, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়াসহ ৭টি ইইউভুক্ত দেশ অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, পুতিনকে রাশিয়ান ফেডারেশনের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ও বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো আইনি ভিত্তি দেখছে না ইউক্রেন।

 উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন ভ্লাদিমির পুতিন। পরে তৎকালীন রুশ প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিনের বদন্যতায় ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো রাশিয়ার অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হন। ওই বছর পুতিনের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করে রাজনীতি থেকে অবসরে যান ইয়েলৎসিন। পরে ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতেন পুতিন। ২০০৪ সালের নির্বাচনে ৭১ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে ফের প্রেসিডেন্ট হন। যুক্তরাষ্ট্রের মতো রাশিয়ার সংবিধানেও কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকার অনুমতি ছিল না। তাই ২০০৮ সালের নির্বাচনে নিজের বিশ্বস্ত অনুসারী দিমিত্রি মেদভেদেভকে তিনি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করান এবং নিজে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হন। সেই নির্বাচনে মেদভেদেভ এবং পুতিন উভয়ই জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১২ সালের নির্বাচনে ফের জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্টের মেয়াদকাল চার বছর থেকে ছয় বছরে উন্নীত করেন এবং দুই বারের বেশি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতা না করার যে বাধ্যবাধকতা ছিল তা বাতিল করেন। পরে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জয়ী হন তিনি। রাশিয়ায় এ পর্যন্ত সবচেয়ে দীর্ঘ সময় প্রেসিডেন্টের পদে থাকার রেকর্ড সাবেক সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্ট্যালিনের। টানা ২৮ বছর ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। শপথগ্রহণের পর এবারের মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে পারলে স্ট্যালিনকে পেছনে ফেলতে সক্ষম হবেন পুতিন।

সর্বশেষ খবর