দীর্ঘ ৯ বছর পর দেশে ফিরেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল দুপুর ২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে সালাহউদ্দিন আহমেদকে স্বাগত জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও মিসেস সালাহউদ্দিন আহমেদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে বিএনপি ও ২০-দলীয় জোটের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালনকালে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী’ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সাবেক এই যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীকে। দীর্ঘ ৬২ দিন পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। তখন থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন।
ঢাকায় পৌঁছে সালাহউদ্দিন আহমেদ বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের সমাধিতে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেখানে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে কর্তৃত্ববাদের কোনো জায়গা হবে না। ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন রক্তস্নাত বিপ্লবের মাধ্যমে পাওয়া বিজয়কে অর্থবহ করতে হবে। জনগণকে প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র উপহার দিতে হবে। অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র থেকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। যেন দলমতনির্বিশেষে গণতন্ত্রের সুফল দেশের মানুষ ভোগ করতে পারে। বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ একটি আইনের শাসনের রাষ্ট্র, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে হবে। স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে যেন সবাই মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারি, তার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।জানা যায়, শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ সালাহউদ্দিনকে অসুস্থ অবস্থায় রাস্তা থেকে উদ্ধারের পর স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করে এবং বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার দেখায়। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়। প্রায় সাড়ে তিন বছর মামলার কার্যক্রম চলার পর ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলায় আদালত নির্দোষ সাব্যস্ত করে খালাস দেন সালাহউদ্দিন আহমেদকে। ছয় মাস পর ভারত সরকার ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। ফলে আরও প্রায় চার বছর পর গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি শিলং জজ কোর্ট থেকে ওই মামলায় খালাস পান। আদালত থেকে তাকে দ্রুত সময়ে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে পাসপোর্ট না থাকায় সালাহউদ্দিন আহমেদ পরে দেশে ফিরতে ট্রাভেল পারমিটের জন্য গৌহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আবেদন করেন। পরে পাসপোর্টের বিকল্প হিসেবে গত বছরের জুনে হাইকমিশন থেকে তাকে তিন মাসের ট্রাভেল পাস দেওয়া হয়।