নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আলু ও পিঁয়াজের দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে কীটনাশকে ২০, আলুতে ১৩ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও পিঁয়াজে ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি বা নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এ সুবিধা বহাল থাকবে। গতকাল এ-সংক্রান্ত পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপন জারির কথা জানিয়েছেন এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মুমেন। এনবিআর জানায়, জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে দেশে পণ্য পরিবহনব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটেছে, যা এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি। উপরন্তু দেশের পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কীটনাশক, আলু ও পিঁয়াজের মতো গুরুত্বপূর্ণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য কমানোর ব্যবস্থা নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সার্বিক বিশ্লেষণপূর্বক করছাড়ের মাধ্যমে উল্লিখিত পণ্যগুলোর আমদানি সহজ করে সরবরাহ বৃদ্ধি করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এনবিআর আদেশে বলা হয়েছে, আমদানি পর্যায়ে পিঁয়াজে ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি বা নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। অন্যদিকে কীটনাশকের ওপর প্রযোজ্য ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া পণ্যটির ওপর সমুদয় রেগুলেটরি শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। আলুতে কাস্টমস ডিউটি (সিডি) ২৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এ ছাড়া আগে এ পণ্যটির ওপর প্রযোজ্য থাকা ৩ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি) সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে পণ্যটিতে মোট শুল্ক কমানো হলো ১৩ শতাংশ।
এসব পণ্যের শুল্ক কমানোর কারণ হিসেবে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আলু ও পিঁয়াজ অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদনের মাধ্যমে যেহেতু দেশের মোট চাহিদার সিংহভাগ মেটানো হয়, আমদানি শুল্ক কম থাকলে দেশি উৎপাদনের ওপর প্রযোজ্য প্রতিরক্ষণ হ্রাস পায় ফলে কৃষক আলু ও পিঁয়াজ উৎপাদনে উৎসাহিত হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নেওয়া কার্যক্রমের ফলে উল্লিখিত পণ্য দুটির বাজারমূল্য সহনশীল পর্যায়ে থাকবে। দীর্ঘমেয়াদে কৃষককে আলু ও পিঁয়াজ উৎপাদনে প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতেও যে কোনো রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে নীতিসহায়তা প্রদানে এবং দেশের উন্নয়ন কর্মকা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় রাজস্ব জোগানে মূল ভূমিকা পালনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একইভাবে সচেষ্ট থাকবে।