সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে বর্তমানে বেশ কয়েকজন বিচারপতির আচরণের (কনডাক্ট) বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান চলছে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বার্তায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়েছে, ওই অনুসন্ধানের বিষয়ে যথেষ্ট অগ্রগতিও হয়েছে। তবে ঠিক কতজন বিচারপতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে তা জানায়নি সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
এর আগে ‘দলবাজ’ ও ‘দুর্নীতিবাজ’ বিচারপতিদের পদত্যাগ অথবা তাদের অপসারণের দাবিতে গত ১৬ অক্টোবর হাই কোর্ট ঘেরাও এবং বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভের মুখে হাই কোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এরপর সুপ্রিম কোর্টের প্রতিদিনের কার্যতালিকায় আর ওই বিচারপতিদের নাম দেখা যায়নি। সুপ্রিম কোর্টের একাধিক সূত্র গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানায়, এই ১২ বিচারপতির মধ্যেই কয়েকজনের বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হতে পারে।
বিচারকাজের বাইরে থাকা ১২ বিচারপতি হলেন- বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান, বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাস, বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন, বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান, বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন। জানা যায়, ২০ অক্টোবর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে রায় দেন আপিল বিভাগ। বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে নিতে ১০ বছর আগে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী এনেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। ২০১৭ সালে রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। রায়ে আপিল বিভাগ সংবিধানের এ-সংক্রান্ত ৯৬ অনুচ্ছেদের ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ উপ-অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হয়। এর মধ্য দিয়ে বিচারপতিদের অপসারণের প্রক্রিয়া জাতীয় সংসদের পরিবর্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফেরে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হয় প্রধান বিচারপতি ও পরবর্তী জ্যেষ্ঠ দুজন বিচারপতিকে নিয়ে।