শিরোনাম
শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

ক্যাজুয়াল শার্টে বৈচিত্র্য

ক্যাজুয়াল শার্টে বৈচিত্র্য

♦ মডেল : সুজান ও আলভী মামুন ♦ ছবি : রায়হান চৌধুরী বাপ্পি হপোশাক : প্লাস পয়েন্ট

ব্যস্ততার এই শহরে হুট করে বেরিয়ে পড়তে ক্যাজুয়াল পোশাকই স্বাচ্ছন্দ্য পুরুষের। জিন্স, গ্যাবার্ডিনের সঙ্গে ক্যাজুয়াল শার্ট খুব মানিয়ে যায়। আর সময়টাও এমন, আছে ভ্যাপসা গরম, হুট করে বৃষ্টির ছাঁট। ক্যাজুয়াল শার্ট হলে আরামটাও ঠিক মিলছে। অফিস, ভার্সিটি কিংবা স্রেফ ঘরের বাইরে এলে শার্ট হলে মন্দ হয় না। সবখানেই মানিয়ে নেওয়া যায়। ক্যাজুয়াল শার্টের প্রশংসা করতে হলে তরুণ বয়সীদের দিকে তাকানো যায়। তারুণ্যের উচ্ছ্বাস ওদের মনে, শরীরে। বয়সের সীমানা দিয়ে অবশ্য সময়টাকে না বাঁধাই ভালো। এখন ক্যাজুয়াল শার্টের ডিজাইন যে কাউকে ট্রেন্ডের সঙ্গেই নিয়ে যায়। রং, ছাপের নকশা আর কাপড়ের ধরনে ফুলহাতা, হাফহাতা শার্টগুলো থেকে পছন্দমতো বেছে নেওয়ার সুযোগ তো

রয়েছেই। চাইলে পরতে পারেন ফুলহাতা হালকা রঙের শার্টগুলো। অফিস, করপোরেট কাজে যাওয়ার জন্য এ শার্টগুলোতে খুব অফিসিয়াল লুক আসবে তা কিন্তু নয়। তবে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে এ শার্টগুলো দেখে নিতে পারেন। চেকের একঘেয়েমি কাটাতে অনেকেই ক্যাজুয়াল কাটের এই শার্টগুলো বেছে নিচ্ছেন আজকাল। ক্যাজুয়াল শার্টে নিয়মনীতি এত নেই। ফর্মালিটিস না থাকলে ফুলহাতা শার্ট হাফহাতা হতে কতক্ষণ। হাতা ভাঁজ করে কব্জি পর্যন্ত গুটিয়ে নিলেও বেশ লাগে। ছেলেদের কাছে এই ফ্যাশনটাও মানিয়ে যায়। অনেকে তো আবার ফুলহাতা শার্টগুলো পরছেই হাতা গুটিয়ে একটু ম্যানলি লুকের জন্য। হাতে জম্পেশ একটা ঘড়ি থাকলে ফুলহাতা ক্যাজুয়াল শার্টের ম্যাজিকটাও হয় দেখার মতো। আজকাল ফ্যাশনটাই এমন, সময়ের সঙ্গে থাকা চাই সারাক্ষণ। খুব বেশি গ্রামার না ঘেঁটে শার্টের হাতা গুটিয়ে নিতে মানা নেই। তবে অফিস ধরতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা না থাকলে ইউনিভার্সিটি বা ঘুরতে যাওয়ার সময় হাফহাতা শার্টও গায়ে জড়িয়ে নিতে পারেন। হাফহাতা শার্টগুলো পরতে আরাম, সহজে ভ্যাপসা গরমে মানিয়ে নেওয়া যায়।

বাসে, গাড়িতে ধুলোবালিতে গরমের ভাপ থেকে বাঁচতে হাফ হাতা শার্টের সঙ্গে পাল্লা দেয় কে? হাফ হাতা, ফুল হাতা শার্টের কথা ছেড়ে এবার নজর দেওয়া যাক ডিজাইন বা নকশার দিকে। খেয়াল করেছেন কি, শার্টে প্রিন্টের বেশ জাঁকজমক এসেছে? যারা ভিন্ন লুকের কথা ভাবছেন তারা প্রিন্টের বৈচিত্র্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন। এ সময়ের শার্টে প্রিন্টের দাপট কিন্তু মনে করিয়ে দিচ্ছে, সময়টাও ওদিকে গড়িয়েছে। কোনো দ্বিধা না রেখে বেছে নিন মানানসই প্রিন্টের শার্ট। ফুলেল নকশা, ডট প্রিন্টের চল খুব। ডিজাইন ও প্যাটার্নের দিক থেকে ফুলেল মোটিফাই দেখা যাচ্ছে বেশি। এর বাইরেও একরঙা এবং ট্রেন্ডি চেকের শার্ট তো আছেই। প্রিন্টের শার্টগুলোয় আবার রঙের খেলা ভীষণ। চোখে লাগার মতো রং যেমন রয়েছে আবার রয়েছে হালকা রংয়ের শার্টও। চোখের আরাম পেতে বেছে নিতে পারেন হালফ্যাশনের হালকা রংগুলো। এখন রং বাছাইয়ে খুব দোটানায় না থাকলেও চলবে। আকাশি থেকে সবুজের ছোঁয়া সবই পরছে যুবারা। শার্টের রং হিসেবে বেছে নিতে পারেন বেগুনি, ব্লু, ওয়াইন, গ্রিন কিংবা অ্যাকোয়া ব্লু রং। অনেকে বেছে নিচ্ছে গাঢ় রং। চোখ ধাঁধানো রং নয় বরং কালো আর ছাইরঙার প্রতি যাদের দুর্বলতা রয়েছে তারা সেগুলো পরছে। প্রিন্টের নকশায় এক রংয়ের দাপট চোখে পড়ার মতো। ব্র্যান্ডগুলোতে প্রিন্ট ও একরঙা শার্ট পাওয়া গেলেও মূলত তরুণদের জন্যই বেশি তৈরি হয় প্রিন্টের শার্টগুলো। যারা বডি ফিটিং শার্ট পছন্দ করেন তারা প্রিন্টের শার্টগুলো একবার হলেও পরে দেখতে পারেন। বডি ফিটিং ছাড়াও বাজারে দেদার মিলছে স্লিম ফিট, ট্র্যাপারড ফিট। তবে খুব বাছাবাছির মধ্যে না গেলে রেগুলার ফিট কিনে ফেলবেন। ক্যাজুয়াল শার্ট রেগুলার ফিটেই মানায় ভালো। ক্যাজুয়াল এক রঙের শার্টের মধ্যে সুতির চলই বেশি। তবে সুতির একরঙা শার্ট পরলে অনেক সময় কিছুক্ষণ চলাফেরা করলে শার্টে ভাঁজ পড়ে যায়। তাই বেছে নিতে পারেন সুতি ও অন্য সুতার মিশ্রণে তৈরি শার্ট। এতে ভাঁজ পড়লেও কম নজরে আসবে। ফ্যাশন সচেতন হলে শার্টের পেছনে লকার লুপ, ফ্যাগ ট্যাগ বা ফ্রন্ট লুপ লাগানো শার্টও কিনতে পারেন। আজকাল ক্যাজুয়াল শার্টে ফেসটিভ কালার, প্রিন্ট, চেক ও এক কালারের কমফোর্ড ফেব্রিক ব্যবহার করা হচ্ছে। শার্টের জনপ্রিয় কলারের কাটের মধ্যে বান কলার, পিন কলার, ট্যাব কলার, বাটন ডাউন কলার, এ¯েপ্রড কলার, কাটওয়ে কলার বেশি ব্যবহৃত হয়। কাফের  ক্ষেত্রে ফ্রেঞ্চ কাফ, কনভার্টেবল স্কয়ার কাফ, এক বোতামের মিটার্ড কাফ বেশ জনপ্রিয়। ইদানীং রেডি টু ওয়ার ব্র্যান্ডগুলোর প্রিমিয়াম  কোয়ালিটির শার্টগুলোতে ফ্রেব্রিক টেক্সচার ও ড্রেপিং নিয়ে এক্সপেরিমেন্টও হচ্ছে বেশ। শার্টের ডিজাইন, কাটিং, ফিটিং ও প্লাকেটে রয়েছে কনট্রাস্ট রিচ ফেব্রিকের ব্যবহার। শার্টের বোতামেও পাবেন ফ্যাশনের খেলা। সাদা স্বচ্ছ বোতাম তেমন দেখা যায় না। শার্টের রং যেমনই হোক, গাঢ় রঙের বোতামই চলছে বেশ। বাটনের মধ্যে রয়েছে মেটাল, অ্যাক্রেলিক ও নেচারাল ডেকোরেটিভ বাটন। ক্যাজুয়াল শার্টের ফ্যাশন ট্রেন্ডের সবচেয়ে সময়োপযোগী সুবিধা হলো ক্যাজুয়াল লুকে বৈচিত্র্য যোগ করতে নানারকম ফ্যাশন অনুষঙ্গ পাওয়া যায়। জিন্স, সানগ্লাস, ঘড়ি আর কনভার্সের সহজ সমীকরণেই ট্রেন্ড ধরা যাচ্ছে। একটা সময় ছিল, উৎসব মানেই যে পাঞ্জাবি আর সেমি ফর্মালেই থেমে যেতে হবে। সেই অঙ্ক এড়িয়ে ডেনিমের সঙ্গে গায়ে জড়িয়ে নিন ক্যাজুয়াল শার্ট। হয়ে উঠুন ট্রেন্ডি।

সর্বশেষ খবর