মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

শিশুদের মলের সঙ্গে রক্ত গেলে

শিশুদের মলের সঙ্গে রক্ত গেলে

শিশুদের অসুখকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শিশুদের এসব অসুখ-বিসুখের মধ্যে একটি হচ্ছে মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া। অনেক সময়ই শিশুদের মলের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে, তাতে আতঙ্কিত না হয়ে যথাযথ চিকিৎসা করলে পুরোপুরি ভালো থাকবে। শিশুদের মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়ার যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে আছে রেকটালে পলিপ, এনাল ফিসার, পাইলস, রেকটাল প্রলাপস, প্রোকটাইটিস ইত্যাদি।

১. পলিপ হচ্ছে ছোট গোটা বা আঙ্গুলের মতো অংশ যা পায়ুপথ বা রেকটামে হয়। এই আঙ্গুলের মতো অংশে যখন মলত্যাগের সময় মলের ঘষা লাগে তখন তাজা রক্ত বের হয়। এই পলিপ কোলোনস্কোপ বা সিগময়ডোস্কোপ নামক একটি যন্ত্রের সাহায্যে পায়ুপথেই অপসারণ করা যায়। এজন্য রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় না বা হাসপাতালে থাকতে হয় না। অপসারণের দুই ঘণ্টার মধ্যে রোগী বাসায় ফিরে যেতে পারে এবং খাওয়া-দাওয়া করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে কোলোনস্কোপি পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হয়, তার কোনো পলিপ আছে কি না। কারণ কিছু ধরনের পলিপ আছে যা কোলন বা বৃহদন্ত্রে হয় এবং এগুলো পরবর্তীতে ক্যান্সারেও রূপান্তরিত হয়।

২. এনাল ফিসার শিশুদের একটি সাধারণ রোগ, মাঝে মাঝে শিশুর মল কষা বা শক্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জোরে বা প্রেশার দিয়ে মলত্যাগ করতে চাইলে সেই শক্ত মল মলদ্বারের পেছন দিকে জোরে ঘষা দেয়, ফলে ওই অংশে একটুখানি ছিঁড়ে যেতে পারে। ছিঁড়ে যাওয়াকেই এনাল ফিসার (Anal Fissare) বলে। এতে মলের সঙ্গে বা টিস্যু পেপারে কয়েক ফোঁটা তাজা রক্ত যায়। শিশুদেরও এই রোগে ভীত হওয়ার কিছু নেই। কোষ্ঠ নরম করলে, যেমন শাক-সবজি খেয়ে বা মিল্ক অব ম্যাগনেশিয়া জাতীয় ওষুধ খেয়ে কোষ্ঠ স্বাভাবিক হলে এ রোগ অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনা-আপনি সেরে যায়। কিন্তু যদি সেরে না যায় বা বার বার ্হতে থাকে তাহলে একজন কোলোরেকটাল সার্জন বা গ্যাস্ট্রো-অ্যাস্ট্রারোলজিক্যাল

 সার্জনের শরণাপন্ন হতে হবে।

৩. রেকটাল প্রলাপসের ক্ষেত্রে মলত্যাগের সময় মলদ্বারটি বের হয়ে আসে, সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। এটি বিশেষ ধরনের ইঞ্জেকশন বা অপারেশনের সাহায্যে চিকিৎসা করা যায়। মূল কথা হচ্ছে, শিশুদেরও মলের সঙ্গে রক্ত গেলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাধারণ চিকিৎসার মাধ্যমে এটি ভালো করা সম্ভব। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনসহ অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু এতে ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই।  এসব ক্ষেত্রে প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

অধ্যাপক ডা. এসএমএ এরফান

কোলোরেকটাল সার্জন, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর