বয়স বাড়লে অনেকেই ঘাড় ব্যথায় ভুগে থাকেন। ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ করেই ঘাড়ের একপাশে প্রচণ্ড ব্যথা, কিংবা কাজ করতে করতে হঠাৎ ঘাড়ের একদিকে প্রবল টান, কিছুতেই ঘাড় ঘোরানো যাচ্ছে না। এই রকম সমস্যায় অনেকেই পড়েছেন। এর কারণ হিসেবে হতে পারে অনেক কিছু। দুর্বল দেহভঙ্গির কারণে ঘাড়ের মাংসপেশিগুলো শক্ত হয়ে যায়। যারা ঘাড় বাঁকিয়ে কম্পিউটারে কাজ করেন কিংবা লেখার টেবিলে কুঁজো হয়ে বসেন, তাদের এ সমস্যা বেশি হয়। ঘাড়ে ব্যথার নানাবিধ কারণ রয়েছে, যেমন যে কোনো ধরনের আঘাত লাগা, পজিশনাল অর্থাৎ ঘাড়ের নড়াচড়ার কারণে ব্যথা বা খারাপ পজিশনে ঘুমিয়ে পড়া, হাড়ের ইনফেকশন, অস্টিওপরোসিস, টিউমার, সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস ইত্যাদি। যদি ঘাড় ব্যথার সঙ্গে বাহু কিংবা হাতে অবশ ভাব দেখা দেয় কিংবা হাতের শক্তি কমে যায় অথবা কাঁধ ব্যথা করে কিংবা ব্যথা হাতের দিকে নামে, তাহলে অবশ্যই যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
কিছু নিয়ম মেনে চলা :
* ঘাড়ে গরম পানির সেঁক নিতে পারেন।
* ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা থাকা অবস্থায় সার্ভাইক্যাল কলার ব্যবহার করে ঘাড়কে বিশ্রাম দিতে হবে।
* ঘাড়ের কিছু কার্যকরী ব্যায়াম রয়েছে, যা ঘাড় ব্যথায় খুবই উপকারী।
ঘাড় ব্যথায় কিছু পরামর্শ :
* ফোমের বিছানায় ঘুমাবেন না।
* যে কোনো এক কাত হয়ে শোবার সময় যেতে হবে ও একইভাবে কাত হয়ে উঠতে হবে।
* ঝুঁকে কোনো কাজ করবেন না।
* ছোট নরম একটা বালিশ রোল ব্যবহার করবেন।
* চলাফেরার সময় সর্বদা কলার ব্যবহার করুন।
* ঘাড় সোজা রেখে দাঁড়িয়ে রান্না করবেন। প্রয়োজন হলে চেয়ারে বসে বা দাঁড়িয়ে রান্না করবেন, চুলার উচ্চতা ঠিক করে নিতে হবে।
* চেয়ারে বসার সময় ঘাড় ও পিঠ সোজা রেখে বসবেন।
* ঘাড় পেছনের দিকে বাঁকিয়ে কোনো কাজ করবেন না।
* ব্যথা বেশি থাকা অবস্থায় ব্যায়াম করবেন না।
* কোনো প্রকার মালিশ, ম্যাসাজ, ফোটানো নিষেধ।
* চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাবেন না। তাই ঘাড়ের ব্যথাকে অবহেলা করা যাবে না।
-ড. মো. সফিউল্যাহ প্রধান, ফিজিওথেরাপি, ডিজএবিলিটিস ও রিহেবিলিটেশন স্পেশালিস্ট ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা