কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি উপত্যকায় শান্তি রাখার আর্জি জানালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চারদিনের আফ্রিকা সফর শেষে মঙ্গলবার সকালেই দেশে ফিরেছেন তিনি। আর দেশে ফিরেই কাশ্মীর নিয়ে নয়াদিল্লিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পারিকার, অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলি, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং, পররাষ্ট্র সচিব এস.জয়শঙ্কর, দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা ও সচিবরা। বৈঠকে উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন মোদি। প্রায় এক ঘন্টা ধরে চলে বৈঠক।
বৈঠক শেষে জিতেন্দ্র সিং সাংবাদিকদের জানান ‘জম্মু-কাশ্মীরের মানুষদের কাছে প্রধানমন্ত্রী শান্তি রাখার আর্জি জানিয়েছেন যাতে শিগগির উপত্যকায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে এবং আর যেন সাধারণ মানুষের প্রাণ না যায়। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সাময়িকভাবে অমরনাথ যাত্রা বন্ধ থাকার পর ফের তা চালু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অমরনাথ যাত্রীদের সুবিধার্থে কোন রকম অসুবিধা যাতে না হয় সে ব্যাপারেও রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন মোদি।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কাশ্মীরের কোকরনাগ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি আবদুল বুরহান ওয়ানি। এরপর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা উপত্যকা। ওয়ানি নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর শুক্রবার রাত থেকেই একাধিক জায়গায় কারফিউ জারি করা হলেও তারই মধ্যে একাধিক জায়গায় পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখনও পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৩২ জন। প্রাণ হারান এক পুলিশ কনস্টেবলও। শতাধিক পুলিশ সদস্য সহ আহত অন্তত ছয় শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে কয়েকজনের আঘাত গুরুতর। সতর্কতা হিসাবে কাশ্মীর উপতক্যায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। অশান্তির আশঙ্কায় দোকান-পাট, বেসরকারি অফিস, ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান, পেট্রল পাম্প সবকিছুই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি অফিস ও ব্যাংকগুলিতেও হাজিরার সংখ্যা কম। এমন এক পরিস্থিতিতে এদিন বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী।
বিডি-প্রতিদিন/ ১২ জুলাই, ২০১৬/ আফরোজ