কুখ্যাত এক অপরাধীকে কিছুতেই ধরা যাচ্ছিল না। তাকে গ্রেফতার করার জন্য দিন-রাত এক করে ফেলেছিল পুলিশ। বাধ্য হয়ে একটু অন্যরকম পথ বেঁছে নিল তারা। সেই অপরাধীর ফোন নম্বর জোগাড় করে এক নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখানো হল। আর তাতেই মিলল সাফল্য। গ্রেফতার হলো ওই অপরাধী। অভিনব এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের ছতরপুরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশের মাহবা জেলার বিজৌরি গ্রামের বাসিন্দা বালকিষণ চৌবের নামে খুনসহ মোট ১৬টি মামলা রয়েছে। চলতি বছরের আগস্ট মাসে মধ্যপ্রদেশের নওগাঁও এলাকায় এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এরপর থেকেই তার সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছিল। কিন্তু কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে বালকিষণের খোঁজ দিতে পারলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে প্রশাসন। তাতেও অবশ্য লাভ হয়নি।
মধ্যপ্রদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে করা সবরকম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। এমন সময় আচমকা বালকিষণের একটি মোবাইল নম্বর তাদের হাতে আসে। সেটি ট্র্যাক করে তার একটি গোপন ঘাঁটির সন্ধান পায় পুলিশ। কিন্তু সেখানে গিয়ে গ্রেফতার করার আগেই পালিয়ে যায় সে। ফের হতাশাই সঙ্গী হয় তদন্তকারীদের। তবে তদন্তের কাজ একমুহূর্তের জন্যও বন্ধ করেনি তারা। আর তারই ফল পাওয়া যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া হয়েছিল। তাই দ্বিতীয়বার বালকিষণের ফোন নম্বর মিলতেই খুব ঠান্ডা মাথায় চারিদিকে নজর রাখছিলেন তদন্তকারীরা। এমন সময় তাদের কাছে খবর আসে বিয়ে করার জন্য মেয়ে খুঁজছে পলাতক ওই অপরাধী। খবরটি শুনে এক নারী কর্মকর্তাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করেন তারা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, দিল্লি থেকে সংগ্রহ করা একটি সিম থেকে বালকিষণকে একদিন হঠাৎ ফোন করেন ওই নারী। তারপর বলেন, ভুল করে ফোন চলে গেছে। এই কথা শুনেও ফোনটি কাটেনি বালকিষণ। উল্টে মহিলাটির বাড়ি কোথায় জানতে চায়। নিজেকে বুন্দেলখণ্ডের বাসিন্দা বলে জানান তিনি। পাশাপাশি বলেন, কাজের সূত্রে বর্তমানে দিল্লিতে বসবাস করছেন। সেদিন দু'জনের মধ্যে এটুকুই কথা হয়েছিল।
এরপর থেকেইফের ফোন করতে শুরু করে বালকিষণ। ধীরে ধীরে দু'জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতাও তৈরি হয়। সম্পর্কের রসায়ন গাঢ় হয়েছে বুঝতে পেরে একদিন বালকিষণকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা। এক কথায় তাতে রাজি হয় বালকিষণ। দু’জনে আলোচনা করে ঠিক করে মধ্যপ্রদেশের ছতরপুরের একটি মন্দিরে বিয়ে করবে। গত বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই মন্দিরে বরের বেশে পৌঁছে গিয়েছিল বালকিষণ। আর সেখানে যেতেই তাকে গ্রেফতার করে সাদা পোশাকে লুকিয়ে থাকা পুলিশ।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ