ইসরায়েলে ইরানের হামলার আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। আর এটাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে দ্রুত সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে সেখানে রণতরি পাঠিয়েছিল। এবার পাঠাচ্ছে সাবমেরিন। এই সাবমেরিন গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রবাহী।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, যে বিমানবাহী রণতরি ইতোমধ্যে এই অঞ্চলে পাঠানো হয়েছিল, তা দ্রুত পৌঁছাবে। সম্প্রতি হিজবুল্লাহ ও হামাসের উচ্চ পদস্থ নেতাদের হত্যার পর সম্ভাব্য বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের শঙ্কার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের। অস্টিন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে যে কোনো আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেবে।
৩১ জুলাই তেহরানে হামাসের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যার পর ইরান কীভাবে ও কখন প্রতিক্রিয়া জানাবে তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ইরান এই হত্যার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে এবং এর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। ইসরায়েল এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি, তবে হত্যায় যুক্ত থাকার সম্ভাবনা ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
পেন্টাগন রবিবার জানিয়েছে, জাভি জর্জিয়া নামক গাইডেড মিসাইল সাবমেরিনটি এ অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া, মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপকে গতি দ্রুত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ রণতরিটি ইতোমধ্যে সেখানে মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে এক বৈঠকের পর এসব পদক্ষেপ নিয়েছেন।
দ্য গার্ডিয়ান বলছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের জন্য এভাবে খোলামেলাভাবে সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশনা বিরল বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। এদিকে আতঙ্ক শুরু হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন বিমান সংস্থা নিরাপত্তার কারণে অঞ্চলটিতে বিমান পরিষেবা বাতিল করেছে। জার্মান বিমান সংস্থা লুফথানসা গতকাল জানিয়েছে, তারা ২১ আগস্ট পর্যন্ত তেল আবিব, বৈরুত, আম্মান, এরবিল ও তেহরানে ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
সুইস এয়ারও তেল আবিব ও বৈরুতের ফ্লাইট বাতিল করেছে। এয়ার ফ্রান্স বৈরুতের ফ্লাইটের স্থগিতাদেশ ২৯ জুলাই থেকে বুধবার পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
যুদ্ধবিরতির চেষ্টা : বাইডেন প্রশাসন মনে করছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা পুনরুজ্জীবিত করা হলে অঞ্চলটির উত্তেজনা প্রশমিত হবে এবং বৃহস্পতিবার আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে।
তবে রবিবার রাতে হামাস মার্কিন প্রচেষ্টার প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, ইসরায়েলকে ইতোমধ্যে টেবিলে থাকা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য চাপ দিতে হবে। হামাসের বিবৃতি ইঙ্গিত দেয়, তারা আলোচনা পুনরায় শুরু করতে রাজি, তবে আগের অবস্থানেই থাকতে চায়।
এদিকে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির নেতারা যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎ বলেছেন, আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করছি এবং স্থিতিশীলতার পথ খুঁজে বের করার জন্য কোনো প্রচেষ্টার ত্রুটি রাখব না।