৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০৭:৫৮

কোরআনের আলোকে সামাজিক আচরণ

মো. আমিনুল ইসলাম

কোরআনের আলোকে সামাজিক আচরণ

প্রতীকী ছবি

সুরা বনি ইসরাইলের ২২-৩৮ নম্বর আয়াতের ১৫টি আয়াতে আল্লাহ ইসলামের সামাজিক উপদেশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বর্ণনা করেছেন। আমরা একে একে এ আয়াত ক'টি উল্লেখের মাধ্যমে জানার ও বোঝার এবং আমাদের জীবনে তা মেনে চলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করব। 

সংক্ষেপে আয়াতগুলোর বাংলা তরজমা হলো- আয়াত ২২, ‘তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক কোর না। করলে তোমরা নিন্দিত ও নিঃসহায় হয়ে পড়বে।’ আয়াত ২৩, ‘পিতা-মাতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবে। তারা বয়োবৃদ্ধ হলে কখনো উহ বোল না। তাদের সঙ্গে সম্মানসূচক কথা বল। তাদের জন্য দোয়া কর এই বলে, হে আল্লাহ! তাদের প্রতি দয়া করুন। যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।’ আয়াত ২৫, ‘তোমাদের রব তোমাদের অন্তরে যা আছে তা ভালো জানেন, তোমরা যদি ভালো মানুষ হয়ে যাও তাহলে আল্লাহ তা মাফ করে দেবেন। তিনি তওবাকারীদের মাফ করে দেন।’ আয়াত ২৬, ‘তোমরা আত্মীয়স্বজনকে তাদের পাওনা দিয়ে দেবে। অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরদেরও। কিছুতেই অপব্যয় কোর না।’ আয়াত ২৭, ‘নিশ্চয়ই যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই।’ আয়াত ২৮, ‘যদি তোমার কাছে দেওয়ার মতো কোনো সম্পদ না থাকে তবে তুমি তোমার মালিকের কাছে অনুগ্রহ কামনা কর। যা পাওয়ার তুমি আশা রাখ।’ আয়াত ২৯, ‘তুমি তোমার হাত গলায় বেঁধে রেখ না এবং কার্পণ্য প্রকাশ পায় সেজন্য খুলেও রেখ না। অন্যথায় বেশি খরচ করার কারণে তুমি নিঃস্ব হয়ে যাবে।’

আয়াত ৩০, ‘নিশ্চয়ই তোমার রব যার জন্য ইচ্ছা তার রিজিক বাড়িয়ে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছা তা সীমিত করে দেন।’ আয়াত ৩১, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের দারিদ্র্যের ভয়ে হত্যা কোর না। আমি তাদের ও তোমাদের রিজিক দান করি। রিজিকের ভয়ে তাদের হত্যা করা মহাপাপ।’ আয়াত ৩২, ‘তোমরা ব্যভিচারের ধারেকাছেও যেও না। নিঃসন্দেহে এটি হচ্ছে একটি অশ্লীল কাজ।’ আয়াত ৩৩, ‘কোনো জীবনকে তোমরা হত্যা কোর না।’ আয়াত ৩৪, ‘তোমরা এতিমের মালসম্পদের কাছে যেও না।’ 

উপরোক্ত আয়াতগুলো সাধারণভাবে মূল্যায়ন করলে আমরা অনুধাবন করতে পারি আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে সমাজে সামাজিক আচরণ ও বিধিনিষেধ যেন মেনে চলতে পারি তা সহজভাবে কোরআনে বিবৃত করেছেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমেই আমরা পরকালে জান্নাত লাভের আশা করি। সেজন্য আমাদের সবার উচিত হবে উপরোক্ত আয়াতগুলোর আলোকে আমাদের প্রত্যেকের জীবন গড়া ও তা মেনে চলা, অনুসরণ করা। তা হলেই আমরা পরকালের শাস্তি থেকে মুক্তি পাব এবং জান্নাত লাভ করতে পারব। 

একটু বিবেচনা করলেই দেখতে পাব আয়াতগুলো থেকে আমাদের জীবনে যা প্রতিফলিত হওয়া উচিত তা হলো, আমরা যেন সমাজে ব্যভিচার না করি, মাপে এবং ওজনে কম না দিই, কাউকে হত্যা না করি, এতিমের সম্পদ গ্রাস না করি, দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তান হত্যা না করি কারণ আল্লাহই হচ্ছেন রিজিকদাতা।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর