পাহাড়ের বুক চিরে আছড়ে পড়ছে জলধারা। হৃদয় নিংড়ানো সৌন্দর্য মিলেছে ঝরনার গায়ে। গুঁড়ি গুঁড়ি জলকণাগুলো আকাশের দিকে উড়ে গিয়ে তৈরি করছে অন্য রকম আভা। যেন সবুজ অরণ্যের প্রাণের ছোঁয়ার পরশ এঁকেছে কেউ। অপূর্ব নৈসর্গিক সৃষ্টি রাঙামাটির পাহাড়ি ঝরনা। রাঙামাটি জেলায় অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়ি ঝরনা থাকলেও নয়নাভিরাম ও বিস্ময়কর প্রাকৃতিক প্রাচুর্য শুধু রাঙামাটির বরকল উপজেলার শুভলং ইউনিয়নে দৃশ্যমান। যা দেখে হৃদয়-মন জুড়ে সৃষ্টি করে শিহরণ। রাঙামাটির বরকল উপজেলায় ছোট-বড় অন্তত ৮টি ঝরনা রয়েছে। এর মধ্যে মূল অর্থাৎ গিরিনির্ঝর ঝরনাটি সত্যিই আকর্ষণীয়। প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু থেকে নেমে আসা জলধারার অপরূপ দৃশ্য না দেখলে কল্পনায় সে ছবি আঁকা অসম্ভব। শ্রাবণের প্রবল বর্ষণে যখন পাহাড় ফিরে পায় তার নব যৌবন। গিরিনির্ঝর ঝরনা তখন ফিরে পায় তার আদি রূপ। অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা এ ঝরনা সেজেছে নবরূপে। ঝরনা সতেজতায় পাহাড়ি ঝিরিগুলো হয়ে ওঠে প্রাণচঞ্চল। সাঁই সাঁই করে ধেয়ে চলে ঝিরির জলরাশি মিলেছে হ্রদের প্রাণে। বহু আগেই দেশ-বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি ঘটেছে রাঙামাটি শুভলং গিরিনির্ঝর ঝরনার। পাহাড়ে ঝরনার শীতল ও চঞ্চলা জলধারা সব পর্যটককেই কাছে টানে সহজে। তাই বর্ষা এলেই ঝরনা স্পটে ভিড় জমে । সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অসংখ্য মানুষের পদভারে ইতিমধ্যে মুখরিত হয়ে উঠেছে ঝরনা স্পট।
কলকল ঝরনাধারার পানিতে গা ভিজিয়ে আনন্দে হারিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য ভ্রমণপিপাসু নারী-পুরুষ। ঝরনাস্থল এখন যেন আনন্দ উৎসবের ফোয়ারা। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের নৌযান ঘাটের ব্যবস্থাপক রমজান আলী জানান, বর্তমানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় অপরূপ দৃশ্য বজায় রয়েছে, যা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটক ও স্থানীয়রা ছুটছেন প্রতিদিন। তাই বোট ভাড়া হচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে।
রাঙামাটির শুভলং ঝরনার টিকিট বিক্রেতা রিন্টু চাকমা জানান, বর্ষা শুরু হলেই পর্যটকের ঢল নামে সুভলং ঝরনা স্পটে। এখন সুভলংয়ের ঝরনাকে ঘিরে পর্যটকের অনেক ভিড়। অনেকে পরিবার-পরিজন ও আপনজনসহ ঝরনা অবলোকনের জন্য আসে। তাই জমে উঠেছে ব্যবসাও।
তবে শুভলং ঝরনাটি ঘিরে পর্যটন ব্যবসা গড়ে উঠলেও সংরক্ষণ করার জন্য নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। কিংবা পর্যটকদের জন্য গড়ে তোলা হয়নি বিশেষ সুব্যবস্থা।
এ ব্যাপারে কথা হয় ঢাকার পর্যটক শরীফ আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, শুভলং ঝরনাটি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি। আর বর্ষাতে ঝরনার পানির সে াত বেড়ে যায়। দেখতে অন্যরকম ভালো লাগে। তবে শুভলং ঝরনা স্পটে ঝরনা ছাড়া দেখার কিছুই নেই। একটি ব্রিজের মতো আছে তাও আবার ভাঙা। কিন্তু ঝরনায় প্রবেশের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা রয়েছে।