মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ হয়ে পাচার হয়েছে ৬০০ কেজি অ্যামফিটামিন

মাহবুব মমতাজী

বাংলাদেশ হয়ে পাচার হয়েছে ৬০০ কেজি অ্যামফিটামিন

শুধু বাংলাদেশ হয়ে অন্তত ৬০০ কেজি অ্যামফিটামিন পাচার করেছে চোরাচালান চক্র। চক্রের সঙ্গে জড়িত পুরান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পরই বেরিয়ে আসে চোরাচালানের পরিমাণ। তবে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন তিন ভারতীয় নাগরিক। সংস্থাটি বলছে, এটি একটি আন্তর্জাতিক চক্র। তদন্ত- সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন,

মিটফোর্ডের কেমিক্যাল ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ বান্টি, জুনায়েদ ইবনে সিদ্দিকী ও নজরুল ইসলাম ধরা পড়ার আগে অন্তত ৬০০ কেজি অ্যামফিটামিন মালয়েশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় পাচার করেছে। তাদের সর্বশেষ ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম ওজনের চালানটি ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়ে। এটি যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। চালানটির মূল্য ছিল প্রায় ২৪ কোটি টাকা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে অ্যামফিটামিন এ দেশে পাঠাতেন ভারতীয় নাগরিক সতীশ। তিনি এগুলো পাঠাতেন হাবিব মাস্টার ও রাজ খানের মাধ্যমে। এই তিন ভারতীয় নাগরিককে পেলে অ্যামফিটামিন চোরাচালানের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, এখনো বাংলাদেশকে ইন্টারন্যাশনাল নারকোটিক কন্ট্রোল বোর্ড (আইএনসিবি) মাদক চোরাচালানের রুট হিসেবে ঘোষণা করেনি। এটি যেন না হয় সে জন্য দ্রুত আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এই নীতিমালা করা জরুরি। শুধু স্ক্যানার দিয়ে মাদক চোরাচালান ঠেকানো যাবে না। এর জন্য ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করতে হবে। উন্নত দেশগুলোতে ডগ স্কোয়াড দিয়েই মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সূত্র জানায়, অ্যামফিটামিন ভারত থেকে বাংলাদেশ হয়ে ফেডেক্স, ইউনাইটেড এক্সপ্রেস ও নেপচুন ফ্রেইট লিমিটেড নামে কুরিয়ারের মাধ্যমে মালয়েশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হতো। ৯ সেপ্টেম্বরের ঘটনা তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। জিন্স প্যান্ট ঘোষণা করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সাতটি কার্টনের আড়ালে বিপুল পরিমাণ অ্যামফিটামিন পাচার করা হচ্ছিল। অ্যামফিটামিনগুলো প্রতিবারই বেনাপোল হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। এগুলো আমদানি করতেন আবুল কালাম আজাদ বান্টি। আমদানির পর বান্টি এসব জুনায়েদ ইবনে সিদ্দিকী ও নজরুল ইসলামের কাছে বিক্রি করতেন। ৭ অক্টোবর বান্টি গ্রেফতার হন। এর আগে অ্যামফিটামিন পাউডার জব্দের ঘটনায় বিভিন্ন সময় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকা থেকে চক্রের অন্য সদস্য মাজেদ, জুনায়েদ ইবনে সিদ্দিকী, নজরুল ইসলাম, বাবলু মজুমদার ও বাপ্পীকে গ্রেফতার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।

সর্বশেষ খবর