শিরোনাম
রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

চলে গেছে নিম্নচাপ, কমবে বৃষ্টিপাত

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলে গেছে নিম্নচাপ, কমবে বৃষ্টিপাত

বিদায় নিয়েছে নিম্নচাপ। রেখে গেছে ক্ষত। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে পানিবন্দী লাখো মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও মাছচাষিরা। তবে আজ দেশের অনেক স্থানে উঁকি দিতে পারে সূর্য। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের কিছু কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। বর্ষা পুরোপুরি বিদায় নিয়ে শীত নামতে অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত ২০-২৫ দিন। এ সময় দক্ষিণের জেলাগুলোয় মাঝে-মধ্যে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও ঝড়ো হাওয়াসহ মুষলধারে বৃষ্টিপাতের তেমন কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

গতকাল অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট স্থল নিম্নচাপটি ক্রমশ দুর্বল হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় সুষ্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে জামালপুর ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছিল। এর প্রভাবে ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, জামালপুরসহ মধ্যাঞ্চলের আকাশ দিনভর মেঘলা ছিল। থেমে থেমে বৃষ্টিপাতও হয় অনেক স্থানে। রাতের মধ্যে লঘুচাপটি পুরোপুরি শক্তি হারিয়ে ফেলতে পারে। এতে আজ দেশের অধিকাংশ স্থানে রোদের দেখা মিলতে পারে। তবে বর্ষা পুরোপুরি বিদায় না নেওয়ায় দেশের কোথাও কোথাও আরও কিছুদিন হালকা বৃষ্টিপাত থাকবে।  রাজশাহী, রংপুরসহ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবশ্য শিশির পড়তে শুরু করেছে। রাতে হালকা শীতও পড়ছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সারা দেশে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।

এদিকে নিম্নচাপ বিদায় নিলেও রেখে গেছে ক্ষতচিহ্ন। ক্ষতি করে গেছে কৃষি ও কৃষকের। মাছের ঘের ডুবে যাওয়ায় পথে বসেছেন অনেক মাছচাষি। আমাদের বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে বাগেরহাটে গতকাল পর্যন্ত তিন দিন ধরে অবিরাম ভারি বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ৬০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শরণখোলা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নেই ৪০টি গ্রাম এখন পানির নিচে। হাজার হাজার পরিবারের বসতঘরের মধ্যে হাঁটু পানি। শরণখোলায় আঞ্চলিক মহাসড়কের ৪টি স্থানে ভয়াবহ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে গেছে সরকারি খাদ্যগুদাম। এদিকে জেলার মোরেলগঞ্জ, রামপাল, বাগেরহাট সদর, চিতলমারী, ফকিরহাট ও মোংলা উপজেলার অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়ে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে ৪০ হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে পানের বরজসহ শীতকালীন সবজি। বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. খালেদ কনক জানিয়েছেন, জেলার ৮ হাজার চিংড়ি ঘের ও পুকুর ডুবে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। উপজেলাগুলো থেকে তালিকা এলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। বগুড়া থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, নন্দীগ্রাম উপজেলায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় পাকা ও আধাপাকা ধান কাদামাটির সঙ্গে লেপ্টে গেছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় ১৯ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৩ হাজার ৮১৫ হেক্টরে লাগানো হয়েছে আগাম জাতের ধান। কদিন পরই ধান কাটা শুরু হবে। কিন্তু বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে নন্দীগ্রাম উপজেলায় সবজি ক্ষেত ও পাকা ও আধাপাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। অসময়ের বৃষ্টিতে শীতের আগাম সবজিও ক্ষতির মুখে পড়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আদনান বাবু বলেন, বৃষ্টি ও বাতাসে অনেক জমির আমন ধান মাটিতে নুয়ে গেছে। হেলেপড়া ধানগুলো প্রতি চারটি গোছা একসঙ্গে হালকা করে বেঁধে দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে, যাতে ধানের গোছাগুলো পানি থেকে উপরে থাকে। তাহলে ফলনের কোনো ক্ষতি হবে না। রোদ উঠলে ধানগাছ আবার উঠে দাঁড়াবে।

সর্বশেষ খবর