শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

রোডম্যাপ ধরেই প্রস্তুতি শুরু

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রোডম্যাপ ধরেই প্রস্তুতি শুরু

সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর পর থেকেই আলোচনা- কারা প্রার্থী হতে পারেন রাজশাহীতে। বিএনপি নির্বাচনে আসছে না এমনটা ধরেই মাঠে কিছুটা ঢিলেঢালা আওয়ামী লীগ। বিগত নির্বাচনগুলোয় যেভাবে মাঠে কাজ করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগকে, এবার তেমনটা চোখে পড়ছে না। মেয়র প্রার্থী বদল হতে পারেন এমন আলোচনা আছে নগরজুড়ে। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর আলোচনায় আছেন বর্তমান মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পর থেকে গুঞ্জন আছে তাকে প্রার্থী না-ও করতে পারে দল। এর পরই আলোচনায় নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও লিটনপত্নী শাহীন আকতার রেণী। আলোচনায় আছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ও নগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী। এ বছরের ২৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা রাজশাহী সফর করেন। বক্তব্য দেন রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠের জনসভায়। অনেকের ধারণা ছিল, ওই সমাবেশ থেকে আগামীর মেয়র প্রার্থীর ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। কিন্তু এমনটা হয়নি। ফলে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ধারণা, এবার বদল হতে পারে প্রার্থী। তবে দলটির একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা জানিয়েছেন, প্রার্থী চূড়ান্ত থাকায় কোনো ঘোষণা আসেনি জনসভা থেকে। এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এবার দলের প্রেসিডিয়ামে জায়গা পেয়েছেন। ফলে রাজনীতির মাঠে তার বিচরণ বৃহৎ ক্ষেত্রে দেখতে চান তার সমর্থকরা। তাই সিটি নির্বাচন নয়, আগামীর সংসদ নির্বাচনে তাকে দেখতে চায় স্থানীয়ভাবে দলটির বড় অংশ। আবার ক্ষুদ্র অংশের প্রত্যাশা, লিটন আরেকবার মেয়র নির্বাচন করুক। কারণ হিসেবে তাদের যুক্তি, উন্নয়নমূলক যেসব কর্মকান্ড তিনি নিয়েছেন, সেগুলো শেষ হতে আরও এক মেয়াদ প্রয়োজন। অন্য কেউ মেয়র হলে সেই উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

যদিও মেয়র নাকি সংসদ নির্বাচন- এ নিয়ে ভাবছেন না এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বলেন, ‘দলীয় প্রধান যেভাবে চাইবেন সেভাবেই হবে। নেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন, আমাকে দিয়ে তিনি কী কাজ করাতে চান। তবে এখন মেয়র হিসেবে আমার কাজ নাগরিকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ধরে রাখা। আমি তা করছি।’ লিটনকে রাজনীতির অন্য ক্ষেত্রে দল দায়িত্ব দিলে মেয়র পদে শাহীন আকতার রেণীর নামটি বেশ আলোচনায়। ২০০৮ সাল থেকে রাজনীতির মাঠে লিটনের পাশে থেকে মাঠ গুছিয়েছেন তিনি। মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে একমাত্র নারী প্রার্থী তিনি। দল তাকে মনোনয়ন দিতে পারে এমনটা ধারণা আওয়ামী লীগের একাংশের। যদিও শাহীন আকতার রেণী জানিয়েছেন, দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটি মেনেই রাজনীতির মাঠে থাকবেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ আগে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে এমপি মনোনয়নের জন্য মাঠে ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক থেকে সভাপতি হতে চেয়েছিলেন। জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে দল তার ওপর আস্থা রাখেনি। এর পরও মাঠে রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছেন। এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে জায়গা পেলে আসাদ নগর রাজনীতিতে মনোযোগ দেন।

আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, সিটি নির্বাচনে তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন। তিনি বলেন, ‘খায়রুজ্জামান লিটনের চেয়ে যোগ্য প্রার্থী হয় না। মেয়র পদে তিনি নির্বাচন করলে আমি প্রার্থী হব না। তিনি (লিটন) প্রার্থী না হলে আমি নির্বাচন করব।’

নিজ থেকে প্রার্থী হতে চান না নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। তবে লিটনের বিকল্প হিসেবে তার নাম আছে আলোচনায়। ডাবলু সরকার বলেন, ‘দল চাইলে যে কোনো দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত আছি। কিন্তু নিজে থেকে দলের কাছে মেয়র পদে মনোনয়ন চাইব না।’ এ ছাড়া মেয়র পদে জাতীয় পার্টি থেকে দলটির যুব সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ওয়াসিউর রহমান দোলন এবং জেলা ও নগর জাপার সাবেক সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাচ্চু প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে বিএনপি নির্বাচন করছে না বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা মিজানুর রহমান মিনু। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘যেখানে সরকারই অবৈধ, সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্নই আসে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেনে নিলে তবেই আমরা নির্বাচনে যাব।’

সর্বশেষ খবর