খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ ১২ জুন। ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে প্রার্র্থীদের নিয়ে সাধারণ ভোটারদের নানামুখী বিশ্লেষণও ততই বাড়ছে। এরই মধ্যে প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া সম্পদের বিবরণ, তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আলোচনায় এসেছে।
হলফনামা অনুযায়ী, মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদ আছে আওয়ামী লীগের প্রার্র্থী তালুকদার আবদুুল খালেকের। তালুকদার খালেক এবং তার স্ত্রী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের বছরে আয় ৫৯ লাখ টাকা এবং সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি টাকা। খালেকের কাছে নগদ ৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আছে। চারটি ব্যাংকে জমা আছে ১ কোটি ১৮ হাজার টাকা। ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও ১৮ লাখ টাকার পোস্টাল এফডিআর রয়েছে তার। দুটি গাড়ির মালিক তিনি। এর মধ্যে একটি গাড়ির দাম দেখিয়েছেন ৪৪ লাখ টাকা ও মাইক্রোবাসের দাম ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। হাবিবুন নাহারের কাছে নগদ টাকা আছে ৭৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা। চারটি ব্যাংকে তার জমা রয়েছে ৯৫ লাখ ৪ হাজার টাকা। সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৫০ লাখ টাকার। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি ব্যবহার করেন তিনি। সেটির দাম উল্লেখ করা হয়েছে ৭৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। অন্যদিকে বার্ষিক আয়ে এগিয়ে আছেন জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধু। তিনি ৮ কোটি ৪১ লাখ টাকার সম্পদের মালিক ও বছরে তার আয় ৯০ লাখ টাকা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আবদুল আউয়ালের বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এর মধ্যে তার ব্যবসা থেকে আয় ১ লাখ ৩৫ হাজার ও মাদরাসার শিক্ষকতা থেকে ১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা আয় করেন। তার অস্থাবর সম্পদ নগদ ৬ হাজার টাকা, ইলেকট্রনিকস সামগ্রীর মূল্য ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা, আসবাবপত্রের মূল্য ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে আছে ১৫ ভরি স্বর্ণ, যার মূল্য ১৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ভোটাররা বলছেন, উন্নয়নের স্বার্থে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচন করবেন। এদিকে মনোনয়ন যাচাইয়ে প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় চার মেয়র প্রার্থীসহ ১৬ জন আপিল করেছেন। এর মধ্যে তথ্য গোপনের অভিযোগে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর কাজী তালাত হোসেন কাউটের হলফনামায় বিচারাধীন মামলার তথ্য গোপন করার অভিযোগ তুলে মনোনয়ন বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেছেন একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শরিফুল ইসলাম। এ ছাড়া প্রার্থিতা ফিরে পেতে চারজন মেয়র প্রার্থী, ৯ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ও দুজন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী আপিল করেছেন। কেসিসি নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান, জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আল আমিন মো. আবদুল্লাহ চৌধুরী ও কামরুল ইসলাম। সংরক্ষিত আসনে নারী কাউন্সিলরদের মধ্যে আপিল করেছেন সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোসা. মাসুদা খানম ও সংরক্ষিত ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নাছিমা আক্তার।
এদিকে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের জাহিদুল ইসলাম, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেন মাতব্বর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের জামান মোল্লা, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ হুমায়ুন কবির, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউসুফ আলী খান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের জাকির হোসেন, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের অহিদুল ইসলাম, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের আমিনুল্লাহ বাহার ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের শমশের আলী মিন্টু। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী আজ এ শুনানি করবেন। তফসিল অনুযায়ী, খুলনা সিটি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ মে, প্রতীক বরাদ্দ ২৬ মে।