পৃথক হত্যা মামলায় পুলিশের দুই সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও শহীদুল হকের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানদার আবু সায়েদ হত্যা মামলায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আট দিন এবং রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় শহীদুল হকের সাত দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গতকাল (বুধবার) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর পৃথক দুই হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। অপরদিকে তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আকতারুজ্জামান তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি।
রিমান্ড শুনানি চলাকালে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) শহীদুল হক বলেছেন, ‘আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমি পুলিশকে জনগণের পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলেছি। হত্যা তো দূরের কথা। আমি এসব বিষয় কিছুই জানি না। আমি ন্যায়বিচার চাই।’ এ সময় চুপ ছিলেন গণহত্যায় সরাসরি অভিযুক্ত সদ্য সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। আবু সায়েদ হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে গত ১৯ জুলাই বিকাল ৪টার দিকে মোহাম্মদপুর থানার বছিলায় ৪০ ফিট চৌরাস্তায় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ নিহত হন। এ ঘটনায় ১৩ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এস এম আমীর হামজা নামে এক ব্যক্তি মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ছাড়াও এ মামলার আসামিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। অপর সাবেক আইজিপি শহীদুলকে রিমান্ডে নেওয়া ওয়াদুদ হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই বিকাল ৫টায় নিউমার্কেটের ১ নম্বর গেটের সামনে গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। নিহত ব্যবসায়ীর ভাগনি জামাই আবদুর রহমান বাদী হয়ে গত ২১ আগস্ট নিউমার্কেট থানায় এ মামলা করেন। এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব চৌধুরী জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ প্রমুখ।