দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে গ্যাস অনুসন্ধানে জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে সেভাবে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম হয়নি। সে সময়ে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করা হয়। গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার না করলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে শতভাগ গ্যাস আমদানি করতে হবে। এ কথা ঠিক যে, গ্যাসের চাহিদা মেটাতে আমাদের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) লাগবে। তবে এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রাকৃতিক গ্যাসের অনুসন্ধান।
আমাদের বর্তমানে দুটি ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) আছে। ভবিষ্যতে আরও দুটি লাগবে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে দেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। ‘সাসটেইন্যাবল অ্যানার্জি ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম রিজওয়ান খান এবং অ্যানার্জি অ্যান্ড পাওয়ার-এর সম্পাদক মোল্লা এম আমজাদ হোসেন।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, প্রতিবছর কমপক্ষে ১০টি নতুন কূপ খনন না করলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এলএনজি আমদানির পরিমাণ বাড়বে। ২০৩০ সালে দেশে গ্যাসের চাহিদা দাঁড়াবে ৪ হাজার ৬২২ এমএমসিএফডি। এই পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করতে পেট্রোবাংলাকে হিমশিম খেতে হবে। দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির পরিমাণ মাত্র ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। তারা রিগ্যাসিফিকেশন টার্মিনাল উন্নত করার জন্য পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা বিশেষ আইন ২০১০ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকার কথা থাকলেও সেটি এখনো বহাল আছে। আমরা এরই মধ্যে আগের সরকারের মেয়াদে নেওয়া ৪০টি প্রকল্পের জন্য নতুন টেন্ডার আহ্বান করব।
আমরা এ খাতের দুর্নীতি বের করতে একটি জাতীয় কমিটি করে দিয়েছি। এ ছাড়া এখন থেকে সরকার নয়, গণশুনানির মাধ্যমে বাংলাদেশ অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করবে। অনুষ্ঠানে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খুব কম। এ জন্য খুব শিগগিরই যে বাংলাদেশ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে মুক্তি পাবে এমন নয়। আমরা এখনো প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানে বড় ধরনের অনুসন্ধানে যাইনি। বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে এখন গ্যাস আবিষ্কারের ওপর জোর দিতে হবে।