নতুন কমিটি গঠনের তোড়জোড়ে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে। গত দুদিনের ব্যবধানে ১০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপির দু’পক্ষ পাল্টপাল্টি বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে।
সেখানে এমএ মজিদের পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করা হয়। এরপর ঘটনা থেমে থাকেনি। শনিবার সন্ধ্যায় আবারো জেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। সেখানে অফিস পরিচালনা করে থাকেন ঝিনাইদহ-২ আসনের এমপি মরহুম মসিউর রহমানের জ্যৈষ্ঠ পুত্র কেন্দ্রীয় ড্যাব সদস্য চিকিৎসক ও জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহিম রহমান বাবু।
ভাঙচুরের ঘটনা তিনি জেলা বিএনপির সভাপতিকে দায়ী করেছেন। ঘটনার পরপর বাবুর নেতৃত্বে জেলা শহরের বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বর্তমানে ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় আবারো রক্তক্ষয়ী সংঘষ হতে পারে বলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেছে। তারা অবিলম্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, দেশের অন্যান্য জেলার মতো কেন্দ্রীয় বিএনপি ঝিনাইদহ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে এগুচ্ছে। বর্তমানে পদ-পদবি ও নিজেদের সামর্থ জানান দিতে জেলায় বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঝিনাইদহ বিএনপির নেতাকর্মীরা। এরই অংশ হিসাবে গত শুক্রবার বিকালে হরিণাকুন্ডু উপজেলার জোড়াদহ ইউনিয়নের লালন বাজারে জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহিম রহমান বাবুর উদ্যোগে এক জনসভায় আয়োজন করা হয়। সেখানে হরিণাকুন্ডু থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তাইজাল হোসেন এবং জোড়াদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাজেদুর রহমান রনির লোকজন হামলা করে। এ সময় ১০জন নেতাকর্মী আহত হয়। হামলার পর ডা. ইব্রাহিম রহমান বাবু অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে। তাইজাল হোসেন ও সাজেদুর রহমান জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ মজিদের সমর্থক বলেও জানান তিনি।
এদিকে শুক্রবার রাতে জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ মজিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, হরিণাকুন্ডুতে যারা বিএনপির নামে সমাবেশ করছিল তারা পতিত সরকারের দোসর। জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ মজিদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনার নেতৃত্ব ছাড়া কোনো ধরনের মিছিল মিটিং সমাবেশ করলে তাদের কঠোরভাবে প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর রকম পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ মিছিলে শহরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ বলেন, হরিণাকুন্ডুতে কোনো বিএনপির সমাবেশ ছিল না। এটা আওয়ামী সমাবেশ ছিল। বাবুর ব্যক্তিগত অফিসে নিজেরাই ভাংচুর করে অন্যের উপর দায় চাপাচ্ছে। এখানে বিএনপির কেউ জড়িত নয়।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ জানান, হরিণাকুন্ডু ও ঝিনাইদহ গীতাঞ্জলী সড়কস্থ কার্যালয়ে ভাংচুরের ঘটনায় যদি কেউ অভিযোগ দেয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল